আর কয়েক দিন পর সজীব হোসেনের (৩০) বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। তার বড় ভাই সৌদিপ্রবাসী মিজানুর রহমান তাকে সেখানে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য তিনি দেশে গাড়ি চালানোও শিখেছেন। কিন্তু আর সৌদি আরব যাওয়া হলো না তার।
লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রায় যোগ দিতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা গেছেন তিনি। সজীব হোসেনের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামে এখন চলছে মাতম। স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো বাড়ি। প্রতিবেশী ও স্বজনদের চোখেমুখেও কষ্টের চাপ। আজ বুধবার তার লাশ গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে বিকেলে দাফন করা হবে। সজীব চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ধন্যপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।
দুপুরে সজীবদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের চৌচালা ঘরের সামনের উঠানে নারী-পুরুষের জটলা। ওখানে নিহত সজীবের বোন কাজল আক্তার আহাজারি করছেন। ছোট ভাইয়ের কথা মনে হতে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন কাজল । কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভাইয়ের হত্যার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, যারা আমার ভাইকে মেরেছে, আল্লাহ তুমি তাদের বিচার করো।
এদিকে মাটিতে লুটিয়ে বিলাপ করছেন সজীবের মা নাজমা বেগম। তিনি বলছেন, বাবারে, তুই বুঝি আমার জন্য আর ওষুধ কিনে আনবি না? মাকে ছাড়া তুই কীভাবে থাকবি? কই গেলি?
বাড়ির উঠানে বসা বাবা আবু তাহের বাক্রুদ্ধ। চুপচাপ একটি চেয়ারে বসে আছেন। সজীবের বাবা বলেন, সজীব টাইলসের কাজ করতেন। এখানে সজীব তার মেজ ভাই সুজনের সঙ্গে কাজ করতেন। গতকাল যখন সজীব বাড়ি থেকে বের হয়, তখন তাকে বলেছিলেন, বাবা, আমি একটু লক্ষ্মীপুর থেকে আসি। সজীব আর বাড়ি আসল না। এল তার লাশ।
সজীবের লাশ পুলিশ ও র্যাবের পাহারায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বুধবার বেলা একটার দিকে। দুপুর থেকেই জানাজায় অংশ নিতে সজীবের গ্রামের বাড়ি স্বজনেরা আসতে থাকেন।