তৌকীর আহমেদের নির্দেশনায় মঞ্চে আসছে ‘তীর্থযাত্রী’

মত ও পথ ডেস্ক

সংগৃহীত ছবি

মঞ্চে আসছে ঢাকার থিয়েটার অঙ্গনের সুপরিচিত দল ‘নাট্যকেন্দ্র’র ১৬তম প্রযোজনা ‘তীর্থযাত্রী’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে আগামী ২ ও ৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টায় এবং ৪ আগস্ট বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে ও সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে নাটকটির মোট ৪টি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।

চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা ও নির্দেশক তৌকীর আহমেদের এটি ঢাকার মঞ্চের তৃতীয় প্রযোজনা। তৌকীর আহমেদ নির্দেশিত তীর্থযাত্রী নাটকটির মূল রচনা হুমায়ূন কবীরের। নাট্যরূপ দিয়েছেন হুমায়ূন কবীর ও তৌকীর আহমেদ।

গত ৭ জুন প্রযোজনাটির মহড়া শুরু হয়। গাজীপুরে ৯ দিনের ক্যাম্প করে প্রযোজনাটি নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রযোজনাটির সেট, কস্টিউম, প্রপস ও অন্যান্য কারিগরি কাজের প্রস্তুতি চলছে।

তৌকীর আহমেদের এর আগে নাট্যকেন্দ্রের ২টি প্রযোজনা গিরিশ কারনার্ডের ‘হয়বদন’ ও নিজের রচনায় ‘প্রতিসরণ’ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন। যা এখনো নাট্যপ্রেমীদের মনে দাগ কেটে আছে। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ‘ইচ্ছামৃত্যূ’ ও ‘তীর্থযাত্রী’ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন।

তীর্থযাত্রী নাটকটির গল্পে উঠে এসেছে যুদ্ধ শেষে ক্লান্ত অবসন্ন তিন সৈনিক বসে থাকেন বিরান প্রান্তরে। তাদের কোনো যাবার জায়গা নেই, যুদ্ধে সব হারিয়েছেন তারা। এই ভিন্ন তিনজন মানুষ অবতীর্ণ হয় এক যাত্রায়, তাদের লক্ষ্য জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া।

মাঠ প্রান্তর পাহাড় নদী পেরিয়ে তারা হেঁটে চলে, নতুন মানুষ নতুন স্থান নতুন রীতি তাদের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির স্তরে উন্নীত করে। তাদের তর্কও এগিয়ে চলে জীবন-মৃত্যু, জয়-পরাজয়,ভালো-মন্দ, জ্ঞান-জ্ঞানের গর্ব, স্বাধীনতা বা অধিকার, শান্তি-সংঘাত সব কিছুই উঠে আসে তাদের তর্কে।

কিন্তু শেষ হয় না তাদের পথ চলা। তাদের এই পথচলা যেন আমাদেরই জীবন জিজ্ঞাসা। আমরা সবাই যেন সেই তীর্থযাত্রী। নাট্যকেন্দ্রের ১৬তম প্রযোজনা ‘তীর্থযাত্রী‘ প্রসঙ্গে তৌকীর আহমেদ উল্লেখ করেন, অনেকদিন পর ঢাকার মঞ্চে নির্দেশনা, যেমন রোমাঞ্চকর তেমনি ভয়ঙ্কর কষ্টসাধ্য একটি কাজ। থিয়েটার মানেই চ্যালেঞ্জ, অনিশ্চয়তা আর ভীতিকে ছাপিয়ে নতুন কিছু করা।

গত ১৮ মার্চ নিউইয়র্কের কুইন্স থিয়েটারে তীর্থযাত্রী মঞ্চায়িত হয় বাংলা সংস্কৃতি কেন্দ্র ও নক্ষত্রের উদ্যোগে। আগস্টের ২৬ ম্যাডিসন থিয়েটারে এবং সেপ্টেম্বর ৮ দক্ষিণ এশিয়ো থিয়েটার উৎসবে ‘তীর্থযাত্রী’ পুনরায় মঞ্চায়িত হবে।

একই নাটকের পুননির্মাণ প্রসঙ্গে তৌকীর আহমেদ বলেন, একটি নাটকের পুনর্নিমাণ আমি প্রতিসরণে করেছি, তবে এবারের অভিজ্ঞতা ভিন্ন, প্রবাস জীবনের ফাঁকে স্বল্পসময়ে প্রতিদিন মহড়া আর ৯ দিনের থিয়েটার ক্যাম্পে দিনরাত পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে তীর্থযাত্রী, একদল পরিশ্রমী কর্মীর শ্রম ও ঘামের কাজ।

তিনি আরও বলেন, নাটকের পুনর্নিমাণ মানে আগের প্রযোজনা টিকে ছাড়িয়ে যাবার চেষ্টা, আগের ভুলগুলো নতুন করে আবিষ্কার করা, সংশোধন ও যোজন-বিয়োজনের মধ্যে দিয়ে নতুন এক নির্মাণ, নতুন এক উপলব্ধিতে উত্তীর্ণের চেষ্টা। দর্শক আপনাদের সেই অভিজ্ঞতার সঙ্গী হবার আমন্ত্রণ।

শেয়ার করুন