স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিচ্ছে না। তাদের অভিযোগ মিথ্যা। বিনা অপরাধে কাউকে আটকও করা হচ্ছে না। যারাই অপরাধ করছেন, আইন অমান্য করছেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছেন- তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আজ রোববার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) চার দশক উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার কখনো বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক টর্চার নয়, রাজনৈতিক চর্চার কথাই সব সময় বলছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা প্রদান করছে না, বরং কর্মসূচির নামে আগুন, ভাঙচুরের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে, ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি হঠাৎ করে আন্দোলনে এসেছে। কিন্তু তাদের বিগত দিনের কার্যকলাপের কারণে জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তার প্রমাণ ২০০৮ ও তার পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে জনগণ তাদের বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছে।
বিএনপির উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) সুনিশ্চিত, তারা জানে যে নির্বাচন আসলে তারা নির্বাচিত হবে না, নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। এজন্য তারা জনগণের কথা, দুর্ভোগ চিন্তা না করেই প্রতিদিন কোনো না কোনো কর্মসূচি দিচ্ছে, আন্দোলন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সুস্পষ্ট, একটি রাজনৈতিক দল আন্দোলন করতেই পারে। তাদের দলীয় নীতি ও মেনুফেস্টো অনুযায়ী তারা জনগণের কাছে যেতে চাইতেই পারে। সেজন্য তাদের বাধা দেওয়া হয় না। তারা (বিএনপি নেতারা) রাজনৈতিক কর্মসূচি করছেন আবার বলছেন যে আমরা নাকি তাদের বাধা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি নেতারা) সম্প্রতি আমাদের কাছে অনুমতি চাইলেন, ডিএমপি কমিশনের কাছে গেলেন যে তারা তারুণ্যের সমাবেশ করতে চান। আমরা বলেছি আমাদের কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা যাবে না। রাস্তাঘাট বন্ধ ও যান চলাচল বিঘ্নিত করা যাবে না। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইলেন, সেখানেই তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরপরও তারা কীভাবে বলেন সরকার তাদের সহযোগিতা করছে না?
বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এ পর্যন্ত তাদের যত নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে সবার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে। তারা কোনো না কোনো মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। এ কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে।
লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মী নিহতের ঘটনায় মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গোয়েন্দা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জানতে পেরেছি দুই গ্রুপ বা ব্যক্তির মধ্যে কর্তৃত্ব ও অংশীদারত্ব নিয়ে অসন্তোষ ছিল অনেকদিন ধরে। এই দুই গ্রুপের সম্পর্কটা এমন জায়গায় গিয়েছিল যে একজন নিহত হয়েছেন। বিএনপি বলছে এটা নাকি তাদের কর্মী। তাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই, নিহত ব্যক্তি বিএনপির কর্মী নয়। পরিবারও সেটি বলেছে।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন, হাইওয়ে পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খান, ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল প্রমুখ।