সুদানের দারফুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানের দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হওয়ার পর এ রকম সহিংসতা আর দেখা যায়নি। খবর আল জাজিরার।

শনিবার (২২ জুলাই) একটি স্থানীয় আইনজীবী ইউনিয়ন জানিয়েছে, দক্ষিণ দারফুর রাজ্যের রাজধানী নিয়ালা শহরে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে।

universel cardiac hospital

দারফুর বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, লড়াইয়ের কারণে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যসহ ১৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। ওই পরিবারের আরও এক সদস্য আহত হয়েছেন।

এছাড়া পশ্চিম দারফুরে লোকজনকে লক্ষ্য করে স্নাইপার হামলার খবর পাওয়া গেছে। চাদের কাছাকাছি অবস্থিত দারফুরের রাজধানী এল-জেনিনাসহ বেশ কিছু এলাকায় বেসামরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। সংঘাত থেকে বাঁচতে কয়েক হাজার বাসিন্দা সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে গেছে।

দারফুর বার অ্যাসোসিয়েশন আরও জানিয়েছে, একজন স্নাইপারের গুলিতে অন্তত একজন নিহত হয়েছে।
হাজার হাজার মানুষ পশ্চিম দারফুর অঞ্চল থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী চাদে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চাদে শরণার্থীর চাপ বাড়ছে। তারা বলছে, জাতিসত্তার ভিত্তিতে আরএসএফের সঙ্গে যুক্ত মিলিশিয়ারা তাদের লক্ষ্যবস্তু করেছে।

গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে সুদানের প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেলরা ক্ষমতার জন্য লড়াই শুরু হয়। সশস্ত্র দুই বাহিনীর সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত এক লাখের বেশি মানুষ সুদান ছেড়ে পালিয়েছে। দেশটির ভেতর বাস্তুচ্যুত হয়েছে আরও তিন লক্ষাধিক বাসিন্দা। দ্রুত এ সংঘাতের সমাপ্তি না হলে ‘সর্বাত্মক বিপর্যয়’ নেমে আসবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

সুদানে কীভাবে বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনা হবে, মূলত তা নিয়ে দুই ক্ষমতাধর সামরিক অধিনায়কের দ্বন্দ্ব থেকে এই লড়াই চলছে।

দেশটির বর্তমান সামরিক সরকার চলছিল মূলত সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে। তার সঙ্গে উপনেতা হিসেবে ছিলেন আরেকটি আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রধান মোহাম্মদ হামদান হেমেডটি দাগালো। বেসামরিক শাসনে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা অনুযায়ী এ দুটি বাহিনীকে একীভূত করার কথা ছিল।

কিন্তু আরএসএফ তাদের বিলুপ্ত করার বিপক্ষে এবং এই পরিকল্পনা থামানোর জন্য নিজেদের বাহিনীকে রাস্তায় নামায়। এরপর তা সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ লড়াইয়ে রূপ নেয়। দুপক্ষের সংঘাতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

শেয়ার করুন