২৯০ এমপির শপথের বৈধতা নিয়ে আপিল শুনানি শুরু 

মত ও পথ ডেস্ক

হাইকোর্ট
হাইকোর্ট। ফাইল ছবি

দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন ও শপথ নেওয়ার অভিযোগে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত ২৯০ জন এমপির শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজের বিরুদ্ধে করা লিভ-টু আপিল শুনানি শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে রয়েছেন ব্যারিস্টার এ এম মাহাবুব উদ্দিন খোকন। আর রাষ্ট্রপক্ষে রয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এস কে) মোরশেদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও সায়েম মোহাম্মদ মুরাদ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর ২৯০ সংসদ সদস্যদের শপথকে অবৈধ দাবি ও তাদের পদে থাকার বৈধতা নিয়ে করা রিট ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে খারিজ করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে একই বছরের সেপ্টেম্বরে আবেদন করা হয়েছিল।

কিন্তু এতদিনও সেটি শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। চার বছরের বেশি সময় পর এসে ওই রিট শুনানির জন্য ফের উদ্যোগ নেন আবেদনকারী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

সে অনুযায়ী আবেদনটি গত বছরের ১১ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানিতে ওঠে। ওই আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নিজেই। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

সেদিন মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, তারা রিট শুনানির তারিখ নির্ধারণের জন্য আবেদনটি উপস্থাপন করেছিলেন। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল সময় চাওয়ায় পরের দিন ওই বছরের ১২ জুন আবেদনটি আবার কার্যতালিকায় ওঠে।

২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ২৯০ সংসদ সদস্য শপথ নেন। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচিত ব্যক্তিরা সে বছরের ৯ জানুয়ারি শপথ নেন। একই বছরের ২৯ জানুয়ারি ওই সংসদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংসদের মেয়াদ গণনা হবে সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে পাঁচ বছর। তাই দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হয়নি। দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে শপথ নেওয়া হয়েছে। এমন যুক্তিতে একাদশ সংসদের ২৯০ সদস্যের নেওয়া শপথের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।

রিটে এমপিদের শপথ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করতে হাইকোর্টের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে ওই রিট আবেদনে বলা হয়, দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই একাদশ সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নেওয়া শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করেছিলেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন।

হাইকোর্টের রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষ বলেছিলেন, ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার দিন থেকে সংসদ সদস্যরা কার্যভার গ্রহণ করে থাকেন। ফলে আগে শপথ নিলেও তাতে সংবিধান বা আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি। ফলে রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

এরপর আবেদনকারী ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে করা লিভ-টু আপিল শুনানি এখন চলছে।

শেয়ার করুন