‘আওয়ামী লীগ সরকার কাজে বিশ্বাস করে, অহেতুক কোনো কথা বলে বেড়ায় না’ জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, আমরা কজ করি, অহেতুক কথা বলে বেড়ায় না। আমরা কাজ করে খায় এবং কজ করেই আপনাদের কাছে আসি। সুতরাং যে কাজ করে ঐ কামলা রাখবেন নাকি যে কোনো কাজ করে না, তাকে কামলা হিসেবে রাখবেন? সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা যখন সরাইলের সাথে ছিলেন তখন এই এলাকায় কী পরিমাণ কাজ হয়েছিল আর আমি আপনাদেরকে সদরের সঙ্গে যুক্ত করে গত ১০ বছরে কী পরিমাণ উন্নয়ন করেছি সেটি একটু হিসাব করে দেখবেন।
২৯ জুন (শনিবার) বুধল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বুধল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা এমন কোনো জায়গা আছে, যেখানে আমরা কাজ করি না? এমন কোনো জায়গা দেখাতে পারবেন না। সব জায়গায় আমরা সমহারে কাজ করি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন। এই সাড়ে তিন বছরে দেশের উন্নয়নে কী করে গেছেন বলেন তো? রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, সেন্ট্রাল পুলিশ, আর্মি, বিডিআর(বিজিবি), বিমান, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, এককথায় বলতে গেলে একটি দেশ পরিচালনার জন্য কোনো কিছুই ছিল না। কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্য সবকিছু করে গেছেন। যারা বলে, বঙ্গবন্ধুর সময়ে কোনো কাজ হয় নাই, তাদেরকে এ জবাবটা দিবেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করেছে শেখ হাসিনা সরকার, নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আরও তো সরকার ছিল, তারা কিন্তু এসব করে নাই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতকরা ৬০ ভাগ মহিলা শিক্ষক দেওয়া হয়েছে, এতে প্রত্যেকটা পরিবারের স্বচ্ছলতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমরা যখন পড়ালেখা করেছি, আমাদের চেয়ে আর্থিকভাবে যেসব শিক্ষার্থীরা দরিদ্র ছিল, তারা আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো কখন আমাদের পুরাতন বইগুলো দিয়ে পড়াশোনা করবে। আর এখন শেখ হাসিনা সরকার বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে নতুন বই সরবরাহ করছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা কাজ করে আপনাদের কাছে আসেন। পাকিস্তান আমলে এদেশে মাত্র সাড়ে সাত কোটি মানুষ ছিলাম, তখনও খাদ্যের অভাবে বহু মানুষ মারা গেছে। সাড়ে সাইত্রিশ লক্ষ টন খাদ্য উৎপাদন আমাদের কম হতো। কিন্তু ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রথম যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে দিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, আমাদেরকে ইসলাম বিরোধী বলবেন? এটিও বলার সুযোগ নেই। কেননা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সরকারিভাবে দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে, আমার নির্বাচনী এলাকায় ৩টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা ধোঁকা দিয়ে মানুষের কাছ থেকে ভোট নিতে চাই না। হ্যাঁ, ভোট আমাদের দরকার, যাতে করে নির্বাচনে জিতে আপনাদের খেদমত করতে পারি। আপনারা ভালো খাদেম চান নাকি আকামের খাদেম চান? আমি কী ভালো খাদেম? ভালো খাদেম হলে আপনারা যদি অনুমতি দেন, তাহলে আমি নৌকার মনোনয়নের জন্য আবেদন করব। এসময় উপস্থিত হাজার হাজার নেতাকর্মী দুই হাত তুলে তাঁকে সমস্বরে সমর্থন জানান ।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোকতাদির চৌধুরী বলেন, কিছু লোক এসে বলবে অমুক খারাপ, কাফের, নাস্তিক। ইসলাম ধর্মে কাউকে নাস্তিক কিংবা কাফের বলার অনুমতি নেই। কে কাফের, কে নাস্তিক, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের চেয়ে বেশি কেউ জানে না। আমাদের প্রিয় নবী তাঁর জীবদ্দশায় কথায় কথায় কাউকে কাফের, মুরতাদ, নাস্তিক বলেন নাই। বরং তিনি যখন জেনেছেন- কেউ কাফের, তখন তার কাছে ইসলামের দাওয়াত পাঠিয়েছেন। আমরা মহানবী (সাঃ) এর দেখানো পথেই চলতে চাই। একসময় বলা হতো, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মসজিদে মসজিদে উলুধ্বনি বাজবে! মসজিদে এখন আপনারা কী আজান শুনেন নাকি উলুধ্বনি শুনেন? কাজেই চিন্তা করে দেখেন আপনারা কোথায় আছেন।