বড় শাস্তি ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার, কাটা হলো বেশ কিছু পয়েন্ট

মত ও পথ ডেস্ক

সংগৃহীত ছবি

টেস্ট ক্রিকেটে নাকি মজা নেই। যারা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া অ্যাশেজ সিরিজ দেখেছেন, তারা এ কথাটা মোটেও মেনে নেবেন না। ক্রিকেটের সমস্ত রূপ-রস, গন্ধ উপহার দিয়ে শেষ হয়েছে টান টান উত্তেজনার অ্যাশেজ সিরিজ। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার কেউ জেতেনি এই টেস্টে। ২-২ ব্যবধানে ড্র হয়েছে।

ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার এই অ্যাশেজ সিরিজ ছিল আবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। অর্থাৎ এই সিরিজ থেকে প্রাপ্ত পয়েন্ট যোগ করা হচ্ছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টেবিলে। কিন্তু ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া, দুই দলের জন্যই দুর্ভাগ্য। স্লো ওভার রেটের কারণে বড় শাস্তি দিয়ে তাদের কাছ কেটে নেওয়া বেশ কিছু পয়েন্ট।

পুরো অ্যাশেষ সিরিজে স্লো ওভার রেটের কারণে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টেবিল থেকে ইংল্যান্ডের কেটে নেওয়া হয়েছে ১৯ পয়েন্ট এবং অস্ট্রেলিয়ার কাটা হয়েছে ১০ পয়েন্ট। যার ফলে, কোনো ম্যাচ না জিতেও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলে জোড়া ম্যাচ জেতা ইংল্যান্ডকে টপকে গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

টানটান উত্তেজনায় ৫ ম্যাচের অ্যাশেজ সিরিজ ২-২ ড্রয়ে নিষ্পত্তি হলেও ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া, উভয় দলকে বিরাট শাস্তির মুখে পড়তে হলো। শুধু আর্থিক জরিমানা নয়, সঙ্গে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে বড় ধাক্কা খেলো উভয় শিবির। কষ্টার্জিত পয়েন্ট কাটা গেলো তাদের।

প্রাথমিকভাবে ৫ ম্যাচের সিরিজ থেকে উভয় দলের সংগ্রহ করার কথা ২৮ পয়েন্ট করে। কেননা উভয় দলই ২টি করে ম্যাচ জিতেছে ও ১টি ম্যাচ ড্র করেছে। প্রতিটি জয়ের জন্য ১২ পয়েন্ট করে ও ড্র ম্যাচে ৪ পয়েন্ট করে পাওয়ার কথা দু’দলের।

আইসিসির শাস্তির কবলে পড়ে শেষমেশ ইংল্যান্ডের জুটেছে মোটে ৯ পয়েন্ট। তাদের কাটা গেলো ১৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ, ৫ ম্যাচের সিরিজ থেকে যত পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে ইংল্যান্ড, কাটা গেছে তার দ্বিগুণেরও বেশি। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার খাতায় রয়েছে সাকুল্যে ১৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ, তাদের কাটা গেছে ১০ পয়েন্ট।

কেন দু’দলের পয়েন্ট কেটে নেওয়া হলো?

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী স্লো ওভার-রেটের শাস্তি হিসেবে কাটা যায় পয়েন্ট। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ে বোলিং কোটা শেষ করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট দলকে মাশুল দিতে হয় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট খুইয়ে। প্রতি ওভার পিছিয়ে থাকার জন্য কেটে নেওয়া হয় ১ পয়েন্ট করে।

সেই সঙ্গে প্রতি ওভার পিছিয়ে থাকার জন্য ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি’র ৫ শতাংশ (আগে ছিল ২০ শতাংশ) হারে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ জরিমানা করার শাস্তির বিধানও রয়েছে।

অ্যাশেজে কিভাবে কাটা হলো ইংল্যান্ডের পয়েন্ট

প্রথম টেস্ট: বার্মিংহ্যামের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড পরাজিত হয়। সুতরাং, ম্যাচ থেকে তারা কোনও পয়েন্ট পায়নি। তবে তারা নির্ধারিত সময়ে ২ ওভার পিছিয়ে থাকায় তাদের ২ পয়েন্ট কাটা যায়। সুতরাং, ইংল্যান্ডের খাতায় থাকে মাইনাস ২ পয়েন্ট।

দ্বিতীয় টেস্ট: লর্ডসের দ্বিতীয় টেস্টও ইংল্যান্ড হারায় ম্যাচ থেকে তারা কোনও পয়েন্ট পায়নি। তবে এই ম্যাচে তারা ৯ ওভার পিছিয়ে থাকায় তাদের ৯ পয়েন্ট কাটা যায়। সুতরাং দ্বিতীয় টেস্টের পরে ইংল্যান্ডের খাতায় থাকে সাকুল্যে মাইনাস ১১ পয়েন্ট।

তৃতীয় টেস্ট: হেডিংলের তৃতীয় টেস্ট জিতে ইংল্যান্ড ১২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে। এই ম্যাচে তাদের স্লো ওভার-রেটের আওতায় পড়তে হয়নি। ফলে আগের ২টি ম্যাচের শাস্তির মাইনাস ১১ পয়েন্ট বাদ দিয়ে তৃতীয় টেস্টের পরে ইংল্যান্ডের খাতায় যোগ হয় মাত্র ১ পয়েন্ট।

চতুর্থ টেস্ট: ম্যানচেস্টারের চতুর্থ টেস্ট ড্র হওয়ায় ইংল্যান্ড ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে। তবে ৩ ওভার পিছিয়ে থাকায় তাদের ৩ পয়েন্ট কাটা যায়। অর্থাৎ, চতুর্থ টেস্ট থেকে মাত্র (৪-৩) ১ পয়েন্ট পায় ইংল্যান্ড। অর্থাৎ, আগের ১ পয়েন্ট মিলিয়ে সিরিজের চতুর্থ টেস্টের পরে ইংল্যান্ডের খাতায় থাকে সাকুল্যে ২ পয়েন্ট।

পঞ্চম টেস্ট: ওভালের শেষ টেস্ট জিতে ইংল্যান্ড ১২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে। তবে ৫ ওভার পিছিয়ে থেকে ৫ পয়েন্ট খোয়ায় তারা। সুতরাং, শেষ টেস্ট থেকে ইংল্যান্ড (১২-৫) ৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করে। আগের ২ পয়েন্ট মিলিয়ে অ্যাশেজের পঞ্চম টেস্টের পরে ইংল্যান্ডের খাতায় থাকে মোট ৯ পয়েন্ট।

অস্ট্রেলিয়ার ১০ পয়েন্ট কিভাবে কাটা হলো?

প্রথম চার টেস্ট ভালোভাবেই শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। সময়মতোই তারা নিজেদের ওভারগুলো শেষ করে। যার ফলে প্রথম চার টেস্ট থেকে প্রাপ্ত ২৮ (১২+১২+৪) পয়েন্টের একটিও কাটা যায়নি। কিন্তু শেষ টেস্টে এসে সব ওলট-পালট করে ফেলে। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ ওভার সময় বেশি লাগিয়ে ফেলে। যার ফলে কাটা যায় ১০ পয়েন্ট। সুতরাং, সিরিজ শেষে তাদের অর্জন ১৮ (২৮-১০) পয়েন্ট।

শেয়ার করুন