বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮২তম প্রয়াণ দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কবিতার উদ্যান থেকে গল্প-উপন্যাসের অরণ্য কিংবা প্রবন্ধের বালিয়াড়ি, সাহিত্যের সবগুলো শাখায় বীরদর্পে বিচরণ করেছেন তিনি। না, শুধু সাহিত্য নয়, শিল্প-সংস্কৃতির আরও বহু খাতে তার সৃষ্টির আলো এখনও জ্বলছে স-মহিমায়। বলছি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা। যার আলোয় বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল হয়েছে বাংলা ভাষা।

আজ রোববার (২২ শ্রাবণ) কবিগুরুর ৮২তম প্রয়াণ দিবস। ১৯৪১ সালের এই দিনে অনন্তলোকে যাত্রা করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

universel cardiac hospital

বিশেষ দিনটি উপলক্ষে নানান আয়োজন করেছে বাংলাদেশের রবীন্দ্রভক্তরা। শুক্র ও শনিবার (৪ ও ৫ আগস্ট) বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী স্মরণানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া টিভি চ্যানেলগুলোতে থাকছে বর্ণিল সব অনুষ্ঠান। এসব আয়োজনে কবিকে তার সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমেই স্মরণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযূষ বড়ুয়া বলেন, রবীন্দ্রনাথের গান আবহমান কালের বাঙালি সংস্কৃতির মূল ধারাকে বিকশিত ও সমৃদ্ধ করেছে। রবীন্দ্রসংগীত হয়ে উঠেছে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি বিকাশের অবলম্বন। তার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে চর্চার মাধ্যমেই আমরা অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়তে পারবো।

১৮৬১ সালের ৭ মে (২৫ বৈশাখ) ব্রিটিশ ভারত অর্থাৎ বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের জোড়াসাঁকোয় জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সমৃদ্ধ পরিবারে জন্মের সুবাদে ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য-শিল্পের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে তার। আর সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত প্রতিভায় তিনি ছিলেন অনন্য। যার সুবাদে শুরু করেন সাহিত্যচর্চা। ১৮৭৮ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’।

পুরোটা জীবন লেখালেখিতে কাটিয়েছেন রবিঠাকুর। ফলে তার সৃষ্টিকর্মের সংখ্যাও বিপুল। ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও ৯৫টি ছোটগল্প রচনা করেছেন তিনি। এর বাইরে তার রচিত গানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। এটাই শেষ নয়, চিত্রশিল্পী হিসেবেও তার প্রতিভা ছিল অনন্য। জীবদ্দশায় প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন তিনি।

১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রথম সাহিত্যিক হিসেবে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠ কবি কিংবা সাহিত্যিকদের মধ্যে তার নামটি উচ্চারিত হয় প্রথমেই। তার লেখায় গীতিধর্মিতা, আধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতি, মানব, দেশ ও ঈশ্বরপ্রেম যে রূপে ফুটে উঠেছে, তা বাংলা সাহিত্যে বিরল।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ ও ভারতের জাতীয় সংগীত ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে’ রবীন্দ্রনাথের লেখা। তার রচিত গল্প-উপন্যাস অবলম্বনে বিভিন্ন ভাষায় বহু চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ‘চারুলতা’, ‘তিন কন্যা’, ‘চোখের বালি’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘চতুরঙ্গ’, ‘ডাকঘর’, ‘গোরা’, ‘সুভা’ ইত্যাদি।

শেয়ার করুন