নির্বাচন কমিশন (ইসি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে ৬৮টি দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত করেছে। সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে দাবি/আপত্তি/অভিযোগের বিষয়ে ১৫ দিনের সময় দিয়ে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। পরে দাবি/আপত্তি নিষ্পত্তি করে চূড়ান্তভাবে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য অন্তর্ভুক্তি করবে ইসি।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) আশাদুল হকের সই করা গণবিজ্ঞপ্তি আগামীকাল বুধবার (৯ আগস্ট) দেশের গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ হবে। পাশাপাশি ইসির ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হবে।
এতে বলা হয়, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদনসমূহ যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই শেষে এ সংক্রান্ত নীতিমালার ৪(৪)(ক) অনুচ্ছেদের আলোকে ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারও কোনো দাবি অথবা আপত্তি অথবা অভিযোগ থাকলে তা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, আগারগাঁও, ঢাকা বরাবর লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
কারও বিরুদ্ধে কোনো দাবি অথবা আপত্তি অথবা অভিযোগ থাকলে উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ আপত্তিকারীর নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখপূর্বক ৬ সেট আপত্তি দাখিল করতে হবে। আপত্তির শুনানি শেষে তা গ্রহণ বা বাতিল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
যে ৬৮ পর্যবেক্ষক সংস্থার নাম প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত-
মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, সেবা সোশ্যাল ফাউন্ডেশন, অগ্রদূত সংস্থা, অ্যাক্টিভিটি ফর রিফরমেশন অফ বেসিক নিডস, হাইলাইট ফাউন্ডেশন, মুভ ফাউন্ডেশন, ডেমোক্রেসি ওয়াচ, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ, ডিজঅ্যাবিলিটি ইন কোজিশন অ্যাক্টিভিটিস, আজমপুর শ্রমজীবী উন্নয়ন সংস্থা, আব্দুল মোমেন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, এসডাপ, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন, লুৎফর রহমান ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস, যুব উন্নয়ন সংস্থা, শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র, বঞ্চিতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, এসকে কল্যাণী ফাউন্ডেশন, সোসাইটি ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট অব রুরাল পিপল, সেতু রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, সোসাইটি ফর ট্রেনিং অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন, রুরাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট, ডেভেলপমেন্ট হেল্পিং কি, তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন, স্বাস্থ্যশিক্ষা সেবা ফাউন্ডেশন, বাঁচতে শেখা, ডপস ফাউন্ডেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অফ বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ভলান্টারি অরগানাইজেশন ফর সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট, ক্রিয়েটিভ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, জেন্ডার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি, ডেভেলপমেন্ট এডুকেশন অ্যান্ড পিস, বেসিক, হিউম্যান রাইটস ভয়েস, সমাজ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রাজবাড়ী উন্নয়ন সংস্থা, ডেভেলপমেন্ট পার্টনার, গরিব উন্নয়ন সংস্থা, সমাহার, সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, হাফেজ্জি চ্যারিটেবল সোসাইটি ফর বাংলাদেশ, ডেভেলপমেন্ট অব মহিলা সোসাইটি, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, রূপনগর শিক্ষা স্বাস্থ্য সহায়তা ফাউন্ডেশন, সোশ্যাল ইকুয়ালিটি ফর ইফেক্টিভ ডেভেলপমেন্ট, ইন্টিগ্রেটেড সোসাইটি ফর রেগস অব হোপ, সমন্বিত নারী উন্নয়ন সংস্থা, পল্লী একতা উন্নয়ন সংস্থা, সোসাইটি ফর হিউম্যান ইম্প্রভমেন্ট অ্যান্ড লাস্টিং ডেভেলপমেন্ট, সেঁজোতি হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, এসো জাতি গড়ি, ওয়েসভা, সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট অ্যান্ড কো অপারেশন অরগানাইজেশন, ফোরাম ফোর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, প্রকাশ গণকেন্দ্র, রুরাল অ্যান্ড আরবান ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, সার্ভিসেস ফর ইকুইটি অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, হিউম্যান ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি হিডস, রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি ফর বাংলাদেশ, গ্রাম উন্নয়ন কর্ম, ইকো কনসার্ন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কমিশন, গণ উন্নয়ন কেন্দ্র ও এসো বাঁচতে শিখি (এবাস)।
ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য দেশের ১৯৯টি বেসরকারি সংস্থা ইসিতে আবেদন করে। পরে ইসির গঠন করা সাত সদস্যের একটি কমিটি আবেদনগুলো প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করে ৬৮টি সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করে।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে ২০০৮ সালে ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করে ইসি। বিষয়টি জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে সংযোজন করা হয় এবং ইসি একটি স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা তৈরি করে।
২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো ১৩৮টি সংস্থাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধন দিয়েছিল ইসি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ছিল ১১৮টি দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা।