ডেঙ্গু প্রতিরোধে ১০টি কাজের কথা বললেন বিশেষজ্ঞরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে করণীয়
ফাইল ছবি

ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ১০টি সুপারিশ করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বহুপক্ষীয় উদ্যোগ ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। পরিস্থিতির উন্নতি করতে মানুষের সচেতন আচরণ ও নাগরিক সমাজের সম্পৃক্ততা জরুরি হয়ে পড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর নিপসম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ: সামনে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন।

পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এই সেমিনারের আয়োজন করে। জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ ছাড়াও সেমিনারে সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা, কীটতত্ত্ববিদ, টিকাবিশেষজ্ঞ, সাধারণ চিকিৎসক, গবেষক, সাংবাদিক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারের শেষ পর্যায়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ১০টি সুপারিশ বা করণীয় উপস্থাপন করা হয়।

universel cardiac hospital

এর মধ্যে আছে- ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ানো, পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৌশলগত অগ্রাধিকার ঠিক করা, স্বাস্থ্যব্যবস্থায় দক্ষতা বাড়ানো, হাসপাতালে রোগী ব্যবস্থাপনায় সৃজনশীল উদ্যোগ, মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা চালু, মশারি বিতরণ, মশার ওপর নিয়মিত নজরদারি, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গোটা সরকারব্যবস্থার সম্পৃক্ততা এবং জোরালো তদারকি ও নিয়মিত কাজের মূল্যায়ন।

সেমিনারে তিনটি অংশ ছিল: দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন, প্যানেল আলোচনা এবং মুক্ত আলোচনার পাশাপাশি প্রশ্ন করার সুযোগ। প্রথম প্রবন্ধ উপস্থাপনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক সানিয়া তাহমিনা বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকারি–বেসরকারি নানা পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। কিন্তু বর্তমান দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে না যে, আমরা একত্রে আছি। নির্বাচনের কারণে ডেঙ্গু ইস্যুটি পেছনে পড়ে গেছে। এতে দুর্যোগ আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনার সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। বর্তমানে ডেঙ্গু জাতীয় জরুরি অবস্থার মতো।

দ্বিতীয় উপস্থাপনায় নিপসমের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক গোলাম ছারোয়ার বলেন, মশানাশক ও লার্ভানাশ কার্যকারিতা হারিয়েছে। মশককর্মীরা যেভাবে কাজ করছেন, তাতে আবাসিক এলাকায় মশা বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি আছে।

প্যানেল আলোচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, ২০ ধরনের অংশীজনকে নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে পাঁচ কোটি মানুষের কাছে সচেতনতামূলক বার্তা গেছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক মুশতাক হোসেন বলেন, দেশে রাজনৈতিক কারণে একাধিকবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যের ব্যাপারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হতে দেখা যায়নি। জরুরি অবস্থার জন্য হাজার হাজার মানুষ মারা যেতে হবে, বিষয়টি তেমন নয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক শাহ মনির হোসেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম শহিদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান।

শেয়ার করুন