বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, গণতন্ত্রের কথা বিএনপি’র মুখে মানায় না। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান উর্দি পড়ে নির্বাচন দিয়েছিল। যিনি আইয়ুব খানের স্বৈরতন্ত্রী শাসনের উত্তরসূরী ছিলেন। দেশটাকে ছারখার করে দিয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, যেই বাঙালি কখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি সেই বাঙালিকে বিশ্বের দরবারে যিনি স্বাধীন জাতি হিসেবে দাঁড় করিয়ে গেছেন তিনি আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেনাবাহিনীর দলছুট কিছু কুলাঙ্গার ও আওয়ামী লীগের ভেতরকার ঘৃণ্য মোশতাকসহ চক্রান্তকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। আল্লাহর অশেষ রহমতে তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা দেশের মাটিতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ইসলাম ধর্মে যুদ্ধ ক্ষেত্রেও শিশুকে, নারীকে হত্যা করা নিষেধ আছে। অথচ এই নরাধম কুলাঙ্গারেরা, যারা ইসলাম ধর্মের নাম ব্যবহার করে সেদিন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল- তারা গর্ভবতী নারী ও শিশুদেরকেও হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করেনি।
প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বাংলাদেশ যে একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হবে এ কথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জানতেন। বাঙালিরা একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারলে এই জাতিকে কেউ কোনোদিন ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না, এই জাতি উঠবেই, এই জাতি জাগবেই। কেননা এই জাতি নুরুলদীনের উত্তরাধিকার বহন করে, এই জাতি সুভাষ চন্দ্র বসুর উত্তরাধিকার বহন করে, এই জাতি তিতুমীরের উত্তরাধিকার বহন করে, এই জাতি হাজি শরীয়ত উল্লাহর উত্তরাধিকার বহন করে। সুতরাং এই জাতিকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। যারা এই জাতি সামনে এগিয়ে যাক তা চায় না, তারাই ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করেছে।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ফখরুল সাহেব বড় বড় কথা বলেন। আপনাকে আমি কিছু বলতে চাই না, আমার বন্ধু ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনার সম্পর্কে অনেক কিছু বলে। আপনার (মির্জা ফখরুল) বাবা রাজাকার ছিল, আপনি রাজাকারের সন্তান তো রাজাকার-ই হবেন। সুতরাং আপনার সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই।
তিনি বলেন, তারেক রহমান লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি লন্ডনে কিভাবে চলেন? তার টাকার উৎস কী? তারেক লন্ডনে লুটপাটের টাকায় চলেন। যেভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে সেভাবে বিএনপি-জামায়াত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের পূর্ব পুরুষরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে পারেনি। আজ আমরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করবো।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, পাকিস্তানপ্রেমী বিএনপি-জামায়াতের উন্নয়ন ভালো লাগে না। তারা পছন্দ করে কৃষককে হত্যা করতে। ১৯৯৫ সালে সারের দাবীতে আন্দোলনরত ১৮ জন কৃষককে তারা হত্যা করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং গাইবান্ধা-৩ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি।
অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার সাবেক মেয়র মো.হেলাল উদ্দিন, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. নাজির মিয়া, জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান শরীফ প্রমুখ।