রেকর্ড বেকারত্ব চীনে

মত ও পথ ডেস্ক

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে রেকর্ড ছুঁয়েছে বেকারত্ব। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশটির মোট কর্মক্ষম নারী-পুরুষের ২১ শতাংশই বর্তমানে বেকার।

গত জুলাইয়ে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে চীনের সরকারি পরিসংখ্যান দপ্তর এনবিএস। এটি জুন মাসের বেকারত্বের হিসেব। জুলাই মাসের কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি। তবে মঙ্গলবার চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে এক পোস্টে এনবিএস জানিয়েছে, বেকারত্ব পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে শুরু করলে এ বিষয়ক পরবর্তী পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হবে।

universel cardiac hospital

প্রসঙ্গত, দেশটির ইতিহাসে এই পরিমাণ বেকারত্ব আগে পরিলক্ষিত হয়নি।

এনবিএসের সেই পোস্টটি ভিউ করেছেন ১৯ কোটি ওয়েইবিও ব্যবহারকারী। ব্যবহারকারীরা অবশ্য এই পোস্ট দেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্রুপ, কটাক্ষ ও সমালোচনাপূর্ণ মন্তব্যে পোস্টের কমেন্টবক্স ভরে ফেলেছেন। এক ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘বাস্তবে চীনে বেকারত্বের সমস্যা কত ভয়াবহ আকার নিয়েছে— তা আমি কল্পনা করতেও ভয় পাই। এনবিএসের হিসাবের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হবে সেই পরিসংখ্যান। বাস্তবতা সম্পর্কে এনবিএসের কোনো ধারণা নেই।’

আরেক ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘এনবিএস মনে করছে, তারা বিবৃতি দেওয়া বন্ধ করলেই দেশের বেকার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।’

মঙ্গলবার বেইজিংয়ের লি নুয়োজুন নামের ১৮ বছর বয়সী এক বিশ্ববিদ্যালয় এএফপিকে জানান, তার পড়াশোনা শেষ হয়নি, কিন্তু এখন থেকে তার আশঙ্কা জাগছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেওয়ার পর চাকরি মিলবে কিনা।

‘আমার অনার্সের মেজর সাবজেক্ট এনভায়ার্নমেন্টাল ডিজাইন। কিন্তু যেভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার বাড়ছে, তাতে পড়াশোনা শেষে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমার চাকরি পাওয়ার আশা কম।’

‘ভবিষ্যতের কথা ভাবলে আমার খুব দুশ্চিন্তা হয়। রীতিমতো অসুস্থ বোধ করি। এ কারণে যতদূর সম্ভব চাকরি নিয়ে চিন্তাভাবনা কম করার চেষ্টা করছি,’ এএফপিকে বলেন নুয়োজুন।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আইটি সেকশনে কর্মরত গুও (৩৫) এএফপিকে জানান, ‘কর্মসংস্থান নিয়ে তরুণ প্রজন্ম ভয়াবহ চাপে রয়েছে। আমার ছোটো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। সে এবং তার বন্ধুরা একই সঙ্গে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

২৯ বছর বয়সী জিউই নামের এক নারী জানান, বর্তমানে যেসব চাকরিজীবী প্রতিষ্ঠান বদল করতে চান তারাও পড়েছেন সমস্যায়। কারণ প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই গড়ে একই পরিমাণ বেতনে প্রস্তাব করে এবং তার বিনিময়ে চাকরির নির্ধারিত সময়ের বাইরে বিপুল পরিমাণ ওভারটাইমের শর্ত দেয়।

‘চীনের চাকরিক্ষেত্রে ইঁদুর দৌড় শুরু হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে আমরা আছি, যেখানে বেকার ও চাকরিরত— উভয়পক্ষই হতাশ,’ এএফপিকে বলেন জিউই।

শেয়ার করুন