শপথ নিলো পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভা

মত ও পথ ডেস্ক

সংগৃহীত ছবি

শপথ নিলেন পাকিস্তানের অন্তবর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারের উপস্থিতিতে শপথ নেন তারা। পাকিস্তানের নির্বাচনকালীন এই মন্ত্রিসভায় প্রবীণ রাজনীতিবিদ, জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী, সাংবাদিক, সাবেক আমলাসহ ঠাঁই পেয়েছেন গণ্যমান্য ২৪ ব্যক্তি। তবে তাদের মনোনীত করার ক্ষেত্রে পিএমএল-এন এবং পিপিপির পছন্দ প্রাধান্য পাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট। খবর ডনের।

বৃহস্পতিবার আইওয়ান-ই-সদরে নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তী মন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে ১৬ জন হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসিবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনজন এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (এসএপিএম) হয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই এই প্রথমবার সরকারের অংশ হয়েছেন।

universel cardiac hospital

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. শামশাদ আখতারকে দেওয়া হয়েছে অর্থ, রাজস্ব, অর্থনৈতিক বিষয় এবং বেসরকারীকরণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আনোয়ার আলী হায়দার। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব জলিল আব্বাস জিলানিকে করা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বেলুচিস্তানের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতিকে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে- স্বরাষ্ট্র, প্রবাসী পাকিস্তানি এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ।

পাকিস্তান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মুর্তজা সোলাঙ্গির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

সুপ্রিম কোর্টের আন্তর্জাতিক সালিশি সেলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহমেদ ইরফান আসলামকে আইন ও বিচার, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রী করা হয়েছে।

এসইসিপির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীকে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। বিশিষ্ট শিল্পপতি গোহর এজাজ পেয়েছেন বাণিজ্য, শিল্প ও উৎপাদন মন্ত্রণালয়।

পিআইটিবির সাবেক প্রধান ড. উমর সাইফকে তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিকম এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এই দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা, উন্নয়ন এবং বিশেষ উদ্যোগ মন্ত্রণালয় দেওয়া হয়েছে সাবেক কেন্দ্রীয় সচিব মুহাম্মদ সামি সাইদকে।

প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী জামাল শাহকে জাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী করা হয়েছে। বিখ্যাত লেখক, কলামিস্ট এবং সাংবাদিক মাদাদ আলী সিন্ধিকে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা এবং পেশাদার প্রশিক্ষণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা, প্রবিধান ও সমন্বয় বিষয়ক দায়িত্ব পেয়েছেন বিশিষ্ট স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নাদিম জান। বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির খলিল জর্জ মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ধর্মীয় পণ্ডিত আনিক আহমেদ।

অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন শহীদ আশরাফ তারারকে দেওয়া হয়েছে তিনটি মন্ত্রণালয়- যোগাযোগ, সামুদ্রিক সম্পর্ক এবং রেলওয়ে।

উপদেষ্টা

অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল ফারহাত হুসেনকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিমান চলাচল উপদেষ্টা করা হয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত আহাদ খান চিমাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মর্যাদাসহ সংস্থাপন উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত করা হয়েছে।

সাবেক সচিব ড. ওয়াকার মাসুদ অর্থ বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং তিনি পাবেন প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা।

বিশেষ সহযোগী

কাশ্মীরি স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ইয়াসিন মালিকের স্ত্রী মিশাল হোসেন মালিককে মানবাধিকার ও নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছেন পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী। তার প্রবাসী বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা হয়েছেন জাওয়াদ সোহরাব মল্লিক।

এছাড়া অবসরপ্রাপ্ত ভাইস অ্যাডমিরাল ইফতিখার রাওকে সমুদ্রবিষয়ক উপদেষ্টা, টিভি উপস্থাপক ও লেখক ওয়াসিহ শাহকে পর্যটন উপদেষ্টা এবং সৈয়দা আরিফা জেহরাকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপদেষ্টা করা হয়েছে।

শেয়ার করুন