বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করে দিয়ে গিয়েছেন বঙ্গবন্ধু: মোকতাদির চৌধুরী

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তিনি এই বাংলার মানুষের জন্য একটি নিজস্ব রাষ্ট্র তৈরি করেছেন এবং এই রাষ্ট্রের ভিত্তি রচনা করে দিয়ে গিয়েছেন। মাত্র নয় মাসের ব্যবধানে আমাদেরকে একটি সংবিধান দিয়েছেন যেটি পাকিস্তান ২৪ বছরেও পারেনি। তিনি আমাদের জন্য এমন কতগুলো মৌলিক আইন তৈরি করে গিয়েছিলেন যারা কারণে আমরা মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে আইনি লড়াই করে বিশাল সমুদ্র সীমা জয় করতে পেরেছি।

২১ আগস্ট (সোমবার) ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

মোকতাদির চৌধুরী বলেন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র যে, একটি জনগোষ্ঠী ও জাতিসত্তার জন্য কত বেশি প্রয়োজন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বাধীন বাংলাদেশ কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাদেরকে এবং কোথায় আমরা যাবো এই যে সুযোগ করে দিয়ে গিয়েছেন, এর হিসাবের খাতা যখন খুলি- তা বিশাল একটি বিষয়।

তিনি বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছর শেখ মুজিব সময় পেয়েছেন। অনেকেই বলেন সাড়ে তিন বছরে তিনি কী করেছেন? আজকের প্রজন্ম তো জানেই না তিনি আমাদের জন্য কী কী করে গিয়েছেন। শেখ মুজিব সাড়ে তিন বছরে একটি আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি রচনা করে গিয়েছেন। একটি দরিদ্র রাষ্ট্রকে স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের সবগুলো থানা ও এসডিও অফিস ছিল পাকিস্তানের তিনি এগুলোকে বাংলাদেশের থানা ও এসডিও অফিসে রুপান্তর করে ছিলেন। পাকিস্তানের সচিবালয়কে বাংলাদেশের সচিবালয়ে রুপান্তর করে ছিলেন। দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে ছিলেন। অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন সম্পন্ন করেন। তাঁর সময়ে সাড়ে তিন হাজার ব্রিজ কালভার্ট পুননির্মাণ করতে হয়েছে। যা জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া এমনকি জননেত্রী শেখ হাসিনার সময়েও হয়নি। এগুলো সহজ কোনো বিষয় ছিল না।

মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন কী দেন নাই- এই সমস্ত কথাবার্তা আমি বলি না। কারণ, যারা এসমস্ত কথাবার্তা বলে তারা না বুঝেই বলে। কেননা শেখ মুজিব-ই তো স্বাধীনতার বিষয়ে কথা বলার একমাত্র বৈধ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। মানুষ তাঁকেই ভোট দিয়েছিল, অন্য কাউকে না। যারা বালখিল্য তারা বলে বেড়ায় অমুক স্বাধীনতার ঘোষক, তমুক স্বাধীনতার ঘোষক। এইসব বালখিল্যদের ব্যাপারে আমার কোনো আগ্রহ নেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ফাহিমা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন।

বক্তব্য রাখছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন। ছবি: মত ও পথ

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই দিনটি যে কত ভয়াবহ ছিল, তা বর্তমান সময়ে অনুধাবন করা কোনোভাবেই সম্ভব না। সারাদিন বেতারে একটি ঘোষণাই প্রচারিত হচ্ছিল- আমি মেজর ডালিম বলছি, শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে। এই কর্কশ ধ্বনি যন্ত্রণা এখন বুঝা সম্ভব নয়। এই ঘাতকের অবস্থান কোথায় এখনও তা অজানা। মেজর ডালিমের যেদিন ফাঁসি কার্যকর হবে সেদিন মনে হয় আমার মতো যারা ১৫ আগস্ট দেখেছে তাদের সকলের আত্মা শান্তি পাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গবেষণা করবে জাতির পিতাকে নিয়ে। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার যে অবদান, তাঁর যে আদর্শ;সেটি নিয়ে অনেক গবেষণার বিষয় রয়েছে। তোমরা তাকে নিয়ে গবেষণা করবে এবং তাঁর আদর্শকে ধারণ করবে। তাঁর আদর্শের মধ্যে সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি, সেটি হলো- তাঁর দেশপ্রেম, দেশের প্রতি আত্মত্যাগ এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা।

শেয়ার করুন