যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই কক্সবাজারে আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা: পুলিশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের নেতা সাইফ উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাদ্রাসাছাত্র আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম এমন দাবি করেন।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলামকে (১৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বাড়ি কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীর ইসলামপুর এলাকায়। এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম।

universel cardiac hospital

পুলিশ সুপার বলেন, আটকের পর আশরাফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আশরাফুল সানমুন হোটেলের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষে সাইফ উদ্দিনকে হত্যা করে পালিয়ে যান। হোটেলের সিসিটিভির ফুটেজে মাস্ক ও পাঞ্জাবি পরিহিত যে তরুণকে সাইফ উদ্দিনের কক্ষ থেকে বেরিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে, তিনিই আটক আশরাফুল।

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হোটেল সানমুনের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উদ্দিনের হাত বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বিকেলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হোটেল সানমুনের এক কর্মচারী নিশ্চিত করেন, গত রোববার রাতে দুজনকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষে ওঠেন সাইফ উদ্দিন।

নিহত সাইফ উদ্দিনের বাড়ি শহরের ঘোনাপাড়ায়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফ উদ্দিন কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের সঙ্গে থাকতেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে করা একটি মামলার হাজিরা দিতে গত বৃহস্পতিবার তিনি কক্সবাজার আদালতে আসেন।

ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, নয়ন নামের এক যুবকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় আশরাফুলের। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে রোববার বিকেলে শহরের বড় বাজার থেকে দেশে তৈরি মদ ও পেয়ারা কিনে হলিডে মোড়ের হোটেল সানমুনের ২০৮ নম্বর কক্ষে ওঠেন তারা। সেখানে মদ ও পেয়ারা খাইয়ে আশরাফুলকে একপর্যায়ে ধর্ষণ করেন সাইফ উদ্দিন। নিজের মুঠোফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন তিনি। পরে আশরাফুলকে মোটরসাইকেলে শহরের গোলদিঘির পাড়ে নামিয়ে দিয়ে আসেন। এক ঘণ্টা পর আশরাফুলকে কল করে আবার হোটেলে ডেকে আনেন সাইফ। হোটেল কক্ষে তাকে আবার যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করেন। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে ও প্রতিশোধ নিতে সাইফ উদ্দিনকে হত্যা করেন আশরাফুল।

শেয়ার করুন