‘ইউক্রেনের পরিণতি হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জাপানের মতো’

মত ও পথ ডেস্ক

সংগৃহীত ছবি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের যেভাবে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের পাশাপাশি নিজের ভূখণ্ডের কিছু অংশের দখল ছেড়ে দিতে হয়েছিল, ইউক্রেনের জন্যও সামনে একই পরিণতি অপেক্ষা করছে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং বর্তমানে জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শক স্কট রিটার।

বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি খোলাখুলি ভাবেই রাশিয়ার দখল থেকে ক্রিমিয়া উদ্ধারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বুধবার রাজধানী কিয়েভে এক আলোচনাচক্রে জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের বহু এলাকা এখন রাশিয়ার দখলে। ক্রিমিয়া সেসবের মধ্যে অন্যতম। আমাদের লক্ষ্য হলো ক্রিমিয়ার দখল ফিরে পাওয়া।’

universel cardiac hospital

‘ইউক্রেন কখনও নিজের অঞ্চল নিয়ে ব্যবসা করে না, কারণ আমরা কখনও নিজেদের জনগণ নিয়ে ব্যবসা করি না,’ আলোচনাচক্রে বলেন জেলেনস্কি।

এই বক্তব্যের জবাব দিয়ে বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে স্কট রিটার বলেন, ‘জনাব প্রেসিডেন্ট, আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে ক্রিমিয়া নিয়ে কিন্তু ব্যবসা হয়েছিল; আর সেই ব্যবসার পরামর্শ দিয়েছিল ন্যাটো।’

‘বরং ব্যবসা না করার কথাটি প্রযোজ্য হতে পারে রাশিয়ার ক্ষেত্রে। কারণ তারা বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী চলে। এই কারণে একদিন ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে নিঃশর্তে আত্মসমর্পণ করতে হবে। একবার ১৯৪৫ সালে স্বাক্ষরিত টোকিও চুক্তির ব্যাপারে চিন্তা করুন। আপনাদের (ইউক্রেন) জন্যও ওরকম ভবিষ্যতই অপেক্ষা করছে।’

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ওই ঘটনাই সমাপ্তি টেনে দিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের।

১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রতিপক্ষ মিত্রশক্তির দেশগুলোর কাছে আত্মসমর্পন করে জাপান। রাজধানী টোকিওতে হয়েছিল এই চুক্তি। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নিজেদের ভূখণ্ডের কিছু অংশের দখলও ছেড়ে দিতে হয় জাপানকে।

২০১৪ সালে রুশ বাহিনীর কাছে কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়ার দখল হারায় ইউক্রেন। ক্রিমিয়া জয়ের পর সেখানে গণভোটের আয়োজন করেছিল রাশিয়া। সেই ভোটে ক্রিমিয়ার জনগণ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।

তারপর ২০১৫ সালে ন্যাটোর উদ্যোগে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল— ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে ইউক্রেনকে।

কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও সেই শর্ত পূরণ করেনি ইউক্রেন; উপরন্তু ২০১৭ সাল থেকে ন্যাটোর সদস্যপদ প্রাপ্তির জন্য তদবির শুরু করে দেশটি।

চুক্তির শর্ত না মানা এবং ন্যাটোর সদস্যপদ প্রাপ্তির তদবিরে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয় রাশিয়া এবং তার জেরেই ২০২২ সালে রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন।

শেয়ার করুন