নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালকে (বীরপ্রতীক) ‘অপহরণ, তাঁর সই জাল ও নাম ভাঙিয়ে টাকা আদায় করাসহ’ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত বুধবার তাঁর স্ত্রী রওশন হোসেন বাদী হয়ে ৯ জনের নামে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানায় মামলাটি করেন। স্থানীয়রা এটাকে ‘রহস্যঘন মামলা’ বলছেন।
মামলায় প্রধান আসামি নাদিয়া আক্তার নামে এক কলেজছাত্রী। এ ছাড়া নাদিয়ার ছোট ভাই পূর্বধলা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাইফকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন– পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলায়মান হোসেন, সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ (পিএস) হিসেবে পরিচিত উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আলম, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, কলেজ শিক্ষক নাদেরুজ্জামান স্বপন ও রতন পাল, ছাত্রলীগ কর্মী শাহ আলীম ও সংসদ সদস্যের গাড়িচালক শফিকুল ইসলাম।
এজাহারে বলা হয়েছে, ফেরদৌস ও কামরুজ্জামানকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালতে এমপির কাজ দেখভালের মৌখিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর এমপির নাম ভাঙিয়ে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেন তারা। অন্য আসামিরা গত ৭ ফেব্রুয়ারি এমপিকে ভুল বুঝিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি পূর্বধলার কাজলা থেকে একটি গাড়িতে করে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে এমপির নিজের বাসা উত্তরায় না নিয়ে ধানমন্ডি এলাকার একটি বাসায় তাঁকে আটকে রাখা হয়। পরে গাড়িচালক পরিবারকে জানান, ওয়ারেসাত হোসেন বিদেশে চলে গেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, এমপিকে জিম্মি করে সই জালিয়াতির মাধ্যমে নাদিয়ার সঙ্গে বিয়ের একটি ভুয়া কাবিননামা তৈরি করা হয়। এরপর সই জাল করে রওশন হোসেনকে তালাকের কাগজ ফটোকপি করে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে গত ২৭ মার্চ বিকেলে ঢাকার একটি বাসা থেকে ওয়ারেসাত হোসেনকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরদিন চিকিৎসার জন্য তাঁকে মালয়েশিয়ায় নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে ১১ আগস্ট দেশে ফেরেন তিনি। মামলার প্রধান সাক্ষী ওয়ারেসাত হোসেন। এ ছাড়া আরও আটজনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
অভিযুক্ত নাদিয়া আক্তারের দাবি, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। অপহরণ, সই জালের বিষয়টি তিনি মামলা হওয়ার পর সাংবাদিকসহ অন্যদের কাছ থেকে জেনেছেন। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও হাস্যকর।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। একজন এমপিকে অপহরণ করলে দেশজুড়ে আন্দোলন হয়ে যেত! কেন যে এমন ঘটনা সাজিয়ে মামলা করা হলো, তা বুঝতে পারছি না।
পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, মামলার বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।