ওয়াগনারসহ অন্যান্য রুশ ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের রাশিয়ার প্রতি অনুগত থাকার শপথ নিতে বলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনসহ ১০ আরোহীকে নিয়ে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার তিন দিন পর পুতিন এই আদেশ জারি করলেন।
সামরিক বাহিনীর সদস্য নন, কিন্তু ইউক্রেনে রুশ বাহিনীকে সহযোগিতা করছেন অথবা আঞ্চলিক প্রতিরোধযোদ্ধা হিসেবে সামরিক তৎপরতা চালাচ্ছেন, এমন সব ব্যক্তিকেই এ আদেশ মানতে হবে। শুক্রবার এ–সংক্রান্ত আদেশে স্বাক্ষর করেন পুতিন। স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর হয়।
গত বুধবার মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার পথে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। ওই উড়োজাহাজে ছিলেন প্রিগোজিন ও ওয়াগনারের সহপ্রতিষ্ঠাতা দিমিত্রি উতকিনসহ ১০ আরোহী। এরপর ১০ লাশ উদ্ধারের ঘোষণা দেওয়া হলেও প্রিগোজিনের নিহত হওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি রুশ কর্তৃপক্ষ। তবে এ ঘটনার পর অনেকটা নেতৃত্বশূন্য হয়েছে ওয়াগনার। এই পরিস্থিতিতে ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারীদের অনুগত থাকার শপথ নেওয়ার আদেশ দিলেন পুতিন।
সামরিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, গত জুন মাসে প্রিগোজিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষণস্থায়ী এক বিদ্রোহ করেন ওয়াগনার সেনারা। এ ঘটনার পরে পুতিন শঙ্কা করছেন, ভাড়াটে সেনাদের ওপর তাঁর কর্তৃত্ব কমেছে। কর্তৃত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতেই এই আদেশ দিয়েছেন তিনি।
লন্ডনভিত্তিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের নাতিয়া সেসকুরিয়া বিবিসিকে বলেন, ‘পুতিন ওয়াগনারের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে বাহিনীটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। এর মধ্য দিয়ে পুতিন নিশ্চিত করতে চাইছেন গত জুনের মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে।’
ইউক্রেন ছাড়ছে ‘রুশিচ’
এদিকে শনিবার রুশিচ নামে ওয়াগনারের একটি উপশাখা ঘোষণা দিয়ে জানায়, ইউক্রেনে সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে তারা। ওয়াগনারের এই উপশাখা কট্টর ডানপন্থীদের নিয়ে গঠিত।
শনিবার এক টেলিগ্রাম পোস্টে রুশিচ অভিযোগ তুলেছে, তাদের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইয়ান পেত্রোভস্কিকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভিসা নীতি লঙ্ঘন করার অভিযোগে ফিনল্যান্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন পেত্রোভস্কি। তাঁকে ইউক্রেনে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া চলমান।