প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ট্যাক্স দেওয়া সকল নাগরিকের দায়িত্ব। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ট্যাক্স ফাঁকি দিলে কাউকে ছাড় দেয় না সে দেশের সরকার। বাংলাদেশেও ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা আইনানুযায়ী চলবে, কোনো বিবৃতি প্রভাবিত করতে পারবে না। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ব্রিকস সম্মেলন যোগদান-পরবর্তী এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভদ্রলোকের যদি এতোই আত্মবিশ্বাস থাকে যে তিনি অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের তো ব্যাংক অনেক। তার ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ সরকারি। এর এমডি (ড. ইউনুস) সরকারি বেতন তুলতেন। তিনি বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কীভাবে বিনিয়োগ করলেন? যারা বিবৃতি দিয়েছেন, তারা কি তাকে প্রশ্ন করেছেন, কীভাবে তিনি এতো টাকা পেলেন? কীভাবে তিনি বিদেশে এত টাকা বিনিয়োগ করলেন, আসা-যাওয়া করেন? আপনারাও (সাংবাদিকরা) তো কোনোদিন এমন প্রশ্ন তাকে করেননি।
তিনি বলেন, এই কাজটা যদি কোনো রাজনীতিবিদ করতেন, তাহলে তো লিখে লিখে কলম শেষ করে ফেলতেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লেখালিখি তো অনেক করেন। তাহলে দুর্নীতিবাজ ধরা পড়লে পছন্দ হলে তার কোনো দোষ নেই, আর অপছন্দ হলে তাকে ভালো করে আচ্ছা মতো …।
শেখ হাসিনা বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে এই মামলা যাতে না হয়, সেজন্য ঘুষ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে যারা বিবৃতি দিচ্ছেন, তাদের কাছে অনুরোধ- তারা বিবৃতি না দিয়ে তাদের ক্লায়েন্টের জন্য আইনজীবী পাঠাক, বিশেষজ্ঞ পাঠাক। তারা এসে দলিল দেখুক। ট্যাক্স ফাঁকি দিলে তো তা ফেরত দিতে হবে। বিশ্বব্যাপী ট্যাক্স দেওয়া সকল নাগরিকের দায়িত্ব। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে কেউ ট্যাক্স ফাঁকি দিলে তাদের সরকার কি কোলে তুলে নাচে? না তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে?
তিনি আরও বলেন, তাই আমি আহ্বান করবো, যারা বিবৃতি দিচ্ছেন, তারা নিজেরা লোক পাঠাবেন, সব দলিল দেখবেন। তারাই বিচার করে যাক কোনো অপরাধ আছে কি না। না হলে আমাদের শ্রম আইন আছে। মামলা আইন অনুযায়ী চলবে, কোনো বিবৃতিতে প্রভাবিত হবে না।
ব্রিকসের সদস্যপদ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে কাউকে বলা হয়নি। বাংলাদেশ চাইলে পাবে না, সে অবস্থা নেই। তিনি বলেন, প্রত্যেক কাজেরই একটা নিয়ম থাকে। আমরা সেটা মেনে চলি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের আগে থেকেই জানিয়েছে, তারা ধাপে ধাপে নেবে। সদস্য সংখ্যা পরে বাড়াবে। আমরা জোর দিয়েছি, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের বিষয়ে।
তিনি বলেন, আমরা এখন বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার অবস্থানে নিয়ে গেছি। তারাও জানে, বাংলাদেশ এখন ভিক্ষা চাওয়ার মতো দেশ না।