নিজ শহর সেন্ট পিটার্সবার্গে সমাহিত প্রিগোজিন

মত ও পথ ডেস্ক

রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনকে সমাহিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) নিজের শহর সেন্ট পিটার্সবার্গের উপকণ্ঠে একটি কবরস্থানে নীরবে তাকে দাফন করা হয়।

গত সপ্তাহে তিনি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান এবং এর ছয় দিনের মাথায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হলো প্রিগোজিনের। বুধবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিডিয়ার ঝলক থেকে দূরে ‘সংক্ষিপ্ত আকারে’ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের পর সেন্ট পিটার্সবার্গের উপকণ্ঠে একটি কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনকে। প্রিগোজিন গত ২৩ আগস্ট প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত হন। আর তার মৃত্যুর বিষয়টি গত ২৭ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করে রাশিয়া।

প্রিগোজিনের প্রেস সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘ইয়েভগেনি ভিক্টোরোভিচের বিদায় ‘সংক্ষিপ্ত আকারে’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যারা বিদায় জানাতে চান তারা পোরোখভস্কয় কবরস্থানে যেতে পারেন।’

উল্লেখ্য, প্রিগোজিন এক সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বেশ ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। কিন্তু দুই মাস আগে গত ২৩ জুন তিনি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এমনকি নিজের যোদ্ধাদের নিয়ে মস্কোর দিকে যাত্রাও শুরু করেন তিনি।

ওই ঘটনায় একদিনের ব্যবধানে প্রিগোজিন পুতিনের ‘বন্ধু থেকে শত্রুতে’ পরিণত হন। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, পুতিনের নির্দেশেই প্রিগোজিনকে হত্যা করা হয়েছে। যদিও এসব দাবিকে ‘মিথ্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে মস্কো।

আল জাজিরা বলছে, ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছিলেন প্রিগোজিন। আর তাই বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ওয়াগনার প্রধানের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতাকে ঘিরে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়।

এছাড়া এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও প্রিগোজিনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার যোগ দেননি প্রেসিডেন্ট পুতিন। অবশ্য পুতিনের এই সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়। রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রো পেসকোভ আগেই জানান, প্রিগোজিনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট পুতিনের যোগ দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই।

অবশ্য গত জুনে বিদ্রোহের পরও পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রিগোজিন। ওই সময় পুতিন তাকে সরাসরি অনুরোধ করেছিলেন, ওয়াগনারের নিয়ন্ত্রণ যেন রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর কাছে তুলে দেওয়া হয়। তবে সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন প্রিগোজিন।

প্রথমে বিদ্রোহ এবং পরে অনুরোধ না রাখার কারণে ওয়াগনার প্রধানের ওপর পুতিন ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন বলে শোনা যায়।

শেয়ার করুন