দেশে ডলার সংকট চলছে বহুদিন ধরেই। সংকট দূর হওয়ার পরিবর্তে বরং বাড়ছে। ডলার সংকটকালের এ সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির বিষয়টি আলোচনার শীর্ষে। ঋণ পেতে চাইছে দেশ, অন্যদিকে ঋণ পেতে নানা শর্তও জুড়ে দিয়েছে আইএমএফ। ঋণের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া শর্ত খতিয়ে দেখতে অক্টোবরে আবারও ঢাকায় আসছে আইএমএফের প্রতনিধি দল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পরামর্শদাতা সংস্থাটির বিশেষ দল আগামী ৪ থেকে ১৯ অক্টোবর ঢাকায় অংশীজনদের সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠক করবে। আলোচনায় গুরুত্ব পাবে আর্থিক খাতের স্থায়িত্ব, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন, ব্যাংক খাতের সংস্কার, তারল্য ব্যবস্থাপনা, ডলারের বাজারভিত্তিক রেটে লেনদেন, ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ গণনা পদ্ধতি, সুদের হার ও মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন, টেকসই আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, বন্ড মার্কেট, ডলার পরিস্থিতের অগ্রগতি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, আইএমএফের প্রতিনিধি দলটি আগামী ৪ অক্টোবর দেশে আসবে। এ বিষয়ে আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে। পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে আলোচনা সূচি নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও স্টকমার্কেটের কাছ থেকে শর্ত ও পরামর্শ বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য আগামী ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
গত ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭৬ মিলিয়ন বা ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছিল বাংলাদেশ। আইএমএফের জুড়ে দেওয়া শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাবে দেশ। আগামী অক্টোবরে আসা প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করছে কবে মিলবে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ। সংস্থাটির শর্ত পূরণ বিলম্ব হলে দ্বিতীয় কিস্তিও বিলম্ব হতে পারে। শর্ত পূরণ হলে ঋণে দ্বিতীয় কিস্তি ৭০ কোটি ৪০ লাখ ডলার মিলবে চলতি বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। আর শেষ কিস্তি আসবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে।
আইএমএফের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি। বর্ধিত তহবিল সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়্যান্স অ্যান্ড সানসেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১৪০ কোটি ডলার। আর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়ার পরে মোট ৪২ মাসে ৭ কিস্তিতে এ ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ঋণের গড় সুদ হবে ২ দশমিক ২ শতাংশ। আর গত বছরের ২৪ জুলাই আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল বাংলাদেশ।