বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (ঢাকা উড়ালসড়ক) উদ্বোধন হবে আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর)। বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্যমেলার মাঠে এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে রোববার থেকে।
প্রথম দফায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এটি খুলে দেওয়া হবে। এ অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। থ্রি হুইলার, সাইকেল এবং পথচারীরা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচল করতে পারবে না। আর মোটরসাইকেল এখনই চলতে দেওয়া হবে না। এছাড়া গাড়ি নিয়ে উড়ালসড়কে দাঁড়ানো ও ছবি তোলা নিষিদ্ধ।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা-নামার জন্য ১৫টি র্যাম্প রয়েছে। এরমধ্যে বনানী ও মহাখালীর দুটি র্যাম্প আপাতত বন্ধ থাকবে। এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যান চলাচলের জন্য টোল দিতে হবে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের টোল ৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা।
ক্যাটাগরি ১-এর অধীনে যে কোনো স্থান থেকে বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশ অতিক্রম করার জন্য গাড়ি, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের নিচে) এবং হালকা ট্রাক (৩ টনের নিচে) টোল রেট ৮০ টাকা।
মাঝারি ট্রাকের জন্য (ছয় চাকা পর্যন্ত) যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য টোল রেট ক্যাটাগরি-২ এর অধীনে ৩২০ টাকা।
ক্যাটাগরি ৩-এর অধীনে যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) টোল রেট ৪০০ টাকা। যে কোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য যে কোনো বাসের (১৬ সিটের বা তার বেশি) টোল রেট ৪-ক্যাটাগরির অধীনে ১৬০ টাকা।
একনজরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
প্রকল্পের রুট: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী)।
বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান: ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড।
শেয়ারহোল্ডারস: ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (থাইল্যান্ড) ৫১ শতাংশ, চায়না শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো অপারেশন গ্রুপ (সিএসআই) ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড ১৫ শতাংশ।
চুক্তি সই: ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি।
সংশোধিত চুক্তি সই: ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর।
প্রকল্পের মেয়াদ: ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রাক্কলিত ব্যয়: আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এরমধ্যে দুই হাজার ৪১৩ কোটি টাকা বা ২৭ শতাংশ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান চায়না এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ৪৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়নার (আসিবিসি) সঙ্গে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারসহ মোট ৮৬১ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়। এরই মধ্যে মোট ৩৮২ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ইউএস ডলার ছাড় হয়েছে।
এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য: মূল এলিভেটেড অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে উঠা-নামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র্যাম্প রয়েছে। র্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
কাজ শুরুর তারিখ: ফর্মাল কন্সট্রাকশন কমেন্সমেন্ট ডেট (সিসিডি) ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি।