বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া জোট’ গঠনের পর আজ মঙ্গলবার প্রথমবারের ভারতে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামছে রাজনৈতিক দলগুলো। ছয় রাজ্যের সাতটি বিধানসভায় উপনির্বাচনের ভোট চলছে। এর মধ্যে তিনটি আসনে আগেরবার বিজেপি জিতেছিল। বাকি চারটিতে বিরোধীরা। এসব আসনের লড়াইকে বিজেপির এনডিএ’র সঙ্গে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের প্রথম বড় কোনো পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা ও উত্তরাখণ্ডে ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধেই লড়াই করছে। বাকি চারটি আসনে ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করছে বিজেপির বিরুদ্ধে।
কড়া নিরাপত্তায় সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে ৮ সেপ্টেম্বর।
বিজেপির বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের মৃত্যুতে পশ্চিমঙ্গের ধূপগুড়ি আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। আসনটিতে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ও বাম কংগ্রেস জোটের ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে। উপনির্বাচনে বিজেপি সেখানে প্রার্থী করেছে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় নিহত জনন্নাথ রায়ের স্ত্রী তাপসী রায়কে। তৃণমূল প্রার্থী করেছে রাজবংশী সম্প্রদায়ের নির্মলচন্দ্র রায়কে। বাম-কংগ্রেসের প্রার্থী লোকসঙ্গীত গায়ক ঈশ্বরচন্দ্র রায়।
ইন্ডিয়া জোটের দুই শরিক কংগ্রেস ও সিপিএমের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে কেরালার পুথুপল্লি আসনে। কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সদ্য প্রয়াত ওমেন চাণ্ডী ওই আসন থেকে ৫০ বছর বিধায়ক ছিলেন। কংগ্রেস সেখানে প্রার্থী করেছে ওমেন চন্ডীর ছেলেকে। সিপিএমের প্রার্থী দলের এক যুব নেতা। তৃতীয় প্রার্থী বিজেপির। তবে বাম-কংগ্রেসের লড়াইয়ের জেরে সেখানে বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা কম।
উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে ঘোসি আসনে প্রার্থী না দিলেও উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বরে দুই দলের লড়াই হচ্ছে। ওই আসনের বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুতে উপনির্বাচন হচ্ছে। সেখানে ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম দুই শরিক কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির লড়াইয়ে বিজেপির জয়ের রাস্তা সহজ বলে মনে করা হচ্ছে।
লড়াই হচ্ছে উত্তর প্রদেশের ঘোসি আসনে। সেখানে বিজেপির প্রার্থী দারা সিং চৌহান দেড় বছর আগে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে জিতেছিলেন। কিন্তু দলটির নেতা অখিলেশ যাদবেব সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে তিনি দল ছাড়েন। বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেন। তিনিই উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী। সমাজবাদী পার্টি প্রার্থী করেছে সুধাকর সিংহকে। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দেয়নি। তারা সমর্থন করছে সমাজবাদী পার্টিকে। ইন্ডিয়া জোটে না থাকলেও প্রার্থী দেয়নি মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টিও। ফলে ওই আসনে বিজেপির সঙ্গে জোর লড়াই হচ্ছে ইন্ডিয়া জোটের।
ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী হিসেবেই ঝাড়খণ্ডের একটি আসনে লড়াই করছেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রার্থী। কংগ্রেস, আরজেডি সমর্থন করছে জেএমএম প্রার্থীকে।
ত্রিপুরায় উপনির্বাচন হচ্ছে দুটি আসনে। বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির ফলে সেখানে তৃণমূল প্রার্থী দেয়নি। অন্যদিকে তিপ্রা মথাও প্রার্থী দেয়নি। কোনো দলকে তারা সমর্থনও করবে না বলে জানিয়েছে। তবে তিপ্রা মথার প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মণের সঙ্গে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর বিজেপি দাবি করছে আঞ্চলিক দলটির ভোট তারা পাবে। একই দাবি বাম-কংগ্রেসেরও।