লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরনগরী ডেরনায় ভয়াবহ ঝড় ও বন্যায় হাজার হাজার মানুষকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সমুদ্রে। উদ্ধারও হচ্ছে হাজারো লাশ। কোনো কোনো লাশ ভূমধ্যসাগরের জোয়ার-ভাটায় ভেসে আসছে তীরে।
ঘটনাস্থল থেকে ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে মানুষকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে প্রবল এই বন্যা। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ১১ হাজার ৩০০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রলয়ঙ্করী এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাঁচ দিন অতিক্রম হয়েছে। দেশটির বিরোধপূর্ণ দুই সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশও অংশ নিয়েছে উদ্ধার কাজে। ভেঙে পড়া ভবন ও বালুর স্তর সরিয়ে দেখা হচ্ছে কেউ চাপা পড়ে আছে কিনা। উদ্ধারকারীরা মুখে মাস্ক লাগিয়েছেন, কারণ লাশ পচা গন্ধ ছড়াচ্ছে দুর্গত এলাকায়। তবে এখনও জীবিত মানুষ ধ্বংসস্তূপে আছে এমন আশা ছাড়তে চায় না বেসরকারি সংস্থা রেড ক্রস। সংস্থাটির লিবিয়ার প্রধান তামের রমাদান বলেন, কর্মীরা এখনও বন্যার কাদা এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে বেঁচে থাকা মানুষদের খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। রেড ক্রিসেন্ট বলছে, এ পর্যন্ত ১১ হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ ২০ হাজার। অবশ্য ডেরনার মেয়র বলেছেন, মোট মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছুঁয়ে যেতে পারে।
ডেরনার পূর্ব দিকের টোব্রুক শহরের বাসিন্দা আলমনসোরি বলেছেন, বন্যায় ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়াদের লাশ সমুদ্র দিয়ে ভেসে যাচ্ছে। কোনো কোনোটি তীরে ভিড়ছে। তিনি জানান, তাঁর পরিবারের কয়েকজন ডেরনায় মারা গেছেন। তিনজন বেঁচে আছেন। টোব্রুকে আত্মীয়দের বাড়িতে তারা ঠাঁই নিয়েছেন।
ডেরনা শহর ধ্বংস হয়ে গেছে, বাড়িঘর না থাকায় তারা চলে এসেছেন। এদিকে, দূষিত পানি সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করেন লিবিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওসমান আবদুল জলিল। তিনি বলেন, শহরের পানি সরবরাহ ভূগর্ভস্থ কূপের ওপর নির্ভরশীল।