আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশিক্ষণ বাবদ ১২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে এ অর্থ ব্যয় হবে।
এক্ষেত্রে প্রশিক্ষকদের সম্মানী, প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা, তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যয়ও রয়েছে এর মধ্যে।
নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণ ব্যয়ের বিষয়টি খাতওয়ারি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কাজেই এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ দিতে হবে।৷ এতে পাঁচ টাকা করে বাড়লে অনেক টাকা বেড়ে যাবে। কেননা, দ্রব্যমূল্য আগের চেয়ে বেশ বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের তিন হাজারের বেশি প্রশিক্ষকদের আবাসিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গেছে। তারাই মাঠ পর্যায়ে নয় লাখ সামর্থিং ভোট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন। এটা ভোটের এক সপ্তাহ আগে শুরু হতে পারে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ হবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা চূড়ান্ত হওয়ার পর। তাই সে অনুযায়ী, ব্যয়টা খাতওয়ারি চূড়ান্ত হবে।
তিনি বলেন, ১২৬ কোটি টাকা প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ আছে। এটা দিয়ে সংসদ নির্বাচন হয়ে যাবে। যদি অল্প সময়ের ব্যবধানে উপজেলা নির্বাচন হয়, তাহলে একই প্রশিক্ষণ দিয়ে সেই নির্বাচনও হয়ে যাবে।
গত ১৬ আগস্ট ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। সেই তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি জানাতে সময় দেওয়া হয় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। দাবি-আপত্তি শুনানি শেষে তা নিষ্পত্তির শেষ সময় ১৭ সেপ্টেম্বর। আর ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৪ সেপ্টেম্বর।
সর্বশেষ ২০২২ সালের হালনাগাদ অনুযায়ী দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৩৭ জন। তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করায় এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরীর মাঠ পর্যায়ে পাঠানো এক নির্দেশনায় জানা গেছে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে উপজেলা বা থানা ভিত্তিক ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই করার জন্য পাঠানো হবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর। এরপর উপজেলা বা থানা ভিত্তিক ছবিসহ ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকা নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে আগামী ২৮ অক্টোবর। সবশেষে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার জন্য হালনাগাদ ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত করা হবে ২ নভেম্বর।
খসড়া তালিকা অনুযায়ী, এবার ৪২ হাজার ৪০০টির মতো ভোটকেন্দ্র হতে পারে। আর ভোটকক্ষ হতে পারে দুই লাখ ৬১ হাজার ৫০০টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোট ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি। এর মধ্যে যাচাই বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৯৯টি কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করবে নির্বাচন কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, নভেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিলের পর আগামী ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণ করা হবে।