এবার এলিফ্যান্ট রোডে সরকারি বাসভবন চাইলেন বিএসএমএমইউর উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএসএমএমইউ
ফাইল ছবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ সরকারি বাসা চান। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ৩৮ নম্বর বাসাটি তাকে বরাদ্দ দিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন তিনি। তবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বলছে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সরকারি বাসা দেওয়ার বিধি নেই। বিএসএমএমইউ উপাচার্যকে সরকারি বাসা বরাদ্দ দেওয়া নিয়ে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে দুই পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, স্বায়ত্তশাসিত বা বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের উচিত নিজেদের আবাসনের ব্যবস্থা নিজেদেরই করা; সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকা ঠিক নয়। এ ছাড়া এলিফ্যান্ট রোডের ওই বাসায় সরকারি কর্মচারীরা থাকেন। এখন যদি অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদকে ওই বাসা দেওয়া হয়, তাহলে তাদের উচ্ছেদ করতে হবে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন পরিদপ্তরের কর্মকর্তারাও বলছেন, তারা শুধু সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্যই বাসার ব্যবস্থা করেন।

universel cardiac hospital

মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, বাসভবনের জন্য প্রথম দফায় গত বছরের জানুয়ারিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য। এরপর চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর সরকারি বাসা চেয়ে আরেকটি চিঠি দেন তিনি। এর জেরে বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের জানুয়ারিতে দেওয়া প্রথম চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে শারফুদ্দিন আহমেদের জন্য গুলশানে সরকারি একটি বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এখন বলছে, উপাচার্যকে ওই বাসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল ভুল। কারণ, স্বায়ত্তশাসিত বা বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কাউকে সরকারি বাসা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই। শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই আবাসন সুবিধা পেয়ে থাকেন।

যেভাবেই হোক বিএসএমএমইউ উপাচার্যের নামে বাসা বরাদ্দ হয়ে যায় উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পরে গত বছরই ওই বাসার বরাদ্দ বাতিল করা হয়।

এ বিষয়ে শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গুলশানের বাসা বাতিল হয়নি। তার কর্মক্ষেত্র থেকে বাসা অনেক দূরে হওয়ায় তিনি নিজেই সেখানে যাননি। এরপর বিষয়টি আর এগোয়নি।

৫ সেপ্টেম্বর গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, এ বিশ্ববিদ্যালয় জাতির পিতার নামে দেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত বিশেষায়িত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের চিকিৎসা জগতের সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন প্রায় আট হাজার সাধারণ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয় এ হাসপাতালে।

বৈকালিক বিশেষায়িত সেবা দেওয়ার মাধ্যমে দেশের সাধারণ রোগীদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবাও দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬টি বিভাগের মাধ্যমে মেডিকেল শিক্ষার স্নাতকোত্তর এমডি, এমএস ডিগ্রি, ডিপ্লোমা কোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি এলিফ্যান্ট রোডের বাসাটি উপাচার্যের নামে বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বর্তমানে ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কর্মকর্তারাও নিজেদের বাসায় বা ভাড়া বাসায় থাকেন।

শেয়ার করুন