‘সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক’ স্থাপনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেন বাইডেন ও নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাইডেন ও নেতানিয়াহু

সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সম্ভাব্য একটি চুক্তি নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পার্শ্ববৈঠকে তারা মিলিত হন। গত ডিসেম্বরে ক্ষমতায় আসার পর বাইডেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর এটিই প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বৈঠকে দুই নেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন তাদের সম্পর্কের টানাপড়েন দূর করতে। কিন্তু বাইডেন স্পষ্ট করেছেন, তাদের মধ্যে যে ভিন্নতা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনায় তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

নেতানিয়াহু বলেছেন, আমি মনে করি যে আপনার নেতৃত্বে আমরা ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি। এই শান্তি আরব-ইসরায়েল সংঘাতের অবসান ঘটানোর দূরবর্তী লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ, ইহুদি রাষ্ট্রের সঙ্গে ইসলামি বিশ্বের পুনর্মিলন এবং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

তিনি আরও বলেছেন, ইতিহাস সৃষ্টিতে তারা একসঙ্গে কাজ করবেন।

সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রতি নিজের সমর্থন তুলে ধরে বাইডেন বলেছেন, একসঙ্গে।

ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধ সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন পুনরাবৃত্তি করেছেন।

বৈঠকের আগে মার্কিন কর্মকর্তারা ধারণা করেছিলেন, এই আলোচনায় ইসরায়েলের বিচারব্যবস্থা সংশোধনের পাশাপাশি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি মোকাবিলা গুরুত্ব পেতে পারে। এছাড়া ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণের একটি সম্ভাব্য চুক্তি নিয়েও তারা আলোচনা করতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরে একটি সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে। সম্ভাব্য এই চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে সৌদি আরব এবং ওয়াশিংটন ও রিয়াদের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর হবে। কিন্তু এই চুক্তি স্বাক্ষর করার মতো তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি।

নেতানিয়াহু অনেক আগেই যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিচারকদের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ, দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন কারণে নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানাননি বাইডেন।

ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসিতে দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের পর্যবেক্ষক ডেভিড মাকভস্কি টুইটারে বলেন, সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাব্য চুক্তি এত গুরুত্বপূর্ণ যে বাইডেন ও নেতানিয়াহু তাদের মতপার্থক্য ভুলে বৈঠক করা ছাড়া উপায় ছিল না।

বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, দুই দেশের মধ্যে বাধাগুলো অতিক্রম করা গেলে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করা মতো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি অর্জন করা সম্ভব হবে।

সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের চুক্তির ক্ষেত্রে অনেক বাধার কথা স্বীকার করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে কয়েক দশক ধরে সংঘাত চলছে। এই দুই দেশকে একত্রিত করতে পারলে অঞ্চলটি শক্তিশালী প্রভাব পড়বে।

হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভ্যান ৭ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের অনেক উপায় আছে। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আমাদের মধ্যে কোনও ফ্রেমওয়ার্ক বা শর্ত প্রস্তুত হয়নি। এখনও অনেক কাজ বাকি।

সূত্র: রয়টার্স

শেয়ার করুন