রামপুরা উলন রোডের বাসিন্দা আতিকুর রহমান। সকালে কাঁচাবাজারে যান তিনি। ঢ্যাঁড়স কিনতে গিয়ে দেখেন প্রতি কেজির দাম ৬০ টাকা। অথচ বৃহস্পতিবার তিনি একই সবজি কেনেন ৫০ টাকায়।
একইভাবে প্রতি আড়াইশো গ্রাম কাঁচা মরিচের দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে আজ। এভাবে প্রতিটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
হঠাৎ দাম বাড়লো কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল মিয়া নামে এক বিক্রেতা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টির কারণে পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। তাই সবজি কম এসেছে। এ কারণে দাম বেড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন বিভিন্ন জায়গায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ফসল রক্ষায় কৃষক ব্যস্ত। এ কারণে জোগান কম।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ বাজার ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা কারওয়ান বাজার থেকে সবজি কিনে খুচরা বিক্রি করেন। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ঢাকায় হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়, যা চলে মাঝরাত পর্যন্ত। বৃষ্টিতে বাজার এবং রাস্তায় পানি জমে থাকায় রাতেও কারওয়ান বাজারে বেচাকেনা কম হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়েছে সবজির দামে।
আজ সকালে রাজধানীতে কাঁচাবাজারগুলোর ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে ঢ্যাঁড়স, বেগুন, ফুলকপি, শসা, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজির দাম বেড়েছে। প্রতিটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
একদিনের ব্যবধানে বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকায়, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, ঝিঙা, ৮০ টাকা, উস্তা ১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকায়।
বাজারে আসা নতুন আগাম শীতের সবজি শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২৪০ টাকা দরে। ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ থেকে ৮০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ৬০ ও বাঁধাকপি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা বাজারে বিক্রেতা ফরিদ মিয়া জানান, কাল রাত ১২টার দিকে কাঁচাবাজারের আড়তগুলোতে পানি জমেছে। সে কারণে বেচাকেনা শুরু হতে দেরি হয়। সকাল ১০টা পর্যন্ত এখনো সব মাল এসে পৌঁছায়নি। ভাঙা ভাঙা মাল নিয়ে আসতে হচ্ছে। এতে ভাড়াও বাড়ছে।
মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে অনেক সবজি খেতের ক্ষতি হয়েছে। তাই কৃষকরা সবজি কম নিয়ে এসেছেন। আর সবজি কম পাওয়া গেলে দাম একটু বাড়েই। তিনি বলেন, বেশি দামে কেনা বলে সবজির দাম একটু বেশি রাখতেই হচ্ছে। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই।
আবদুল আলিম নামে এক ক্রেতা বলেন, বৃষ্টি হোক বা যাই হোক, কোনো অজুহাত থাকলে বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে এটা স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে গেছে। বিক্রেতারা দাম বাড়ানোর জন্য শুধু অজুহাত খোঁজে।
বাজারে ইলিশ মাছের দামও বেশি। ৭০০ টাকার নিচে ছোট জাটকা ইলিশও কেনা যাচ্ছে না। ৮০০ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়। আর এক কেজি সাইজ বা তার থেকে বেশি হলে দাম পড়ছে ১৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা।
ইলিশের দাম বাড়ার প্রভাবে বাজারে অন্য মাছের দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৫০ টাকা। কারণ হিসাবে ভারতে ইলিশ রপ্তানির ঘোষণার পর দাম বেড়েছে এমনটি জানিয়েছেন ইলিশ ব্যবসায়ী জামিদুল হক।