সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টির বেগ তখন বেশি ছিল না। রাত ৮টা নাগাদ মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় আড়াইটা ঘণ্টা টানা বৃষ্টির পর থেমে থেমে চলছেই। এতে ডুবে গেছে ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তাঘাট, অলিগলি। একদিকে যানজট অন্যদিকে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
গ্রিন রোড, নর্থ ধানমন্ডিসহ আশেপাশের সব গলিতে হাঁটু পানি। সেখানকার গ্রিন লাইফ হাসপাতাল, সেন্ট্রাল হাসপাতাল এবং ল্যাবএইডে আসা রোগীরা পড়েছেন বিপদে৷পানির কারণে বের হতে পারছেন না রোগীরা। একই অবস্থা রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ, সিদ্ধেশ্বরী, বেইলি রোড এবং শান্তিনগরেও। মতিঝিলে পানি হাঁটুর উপরে উঠে গেছে। এছাড়া কুড়িল, বনানী, তেজগাঁও, খামাড়বাড়ি, ধানমন্ডি ২৭, শুক্রাবাদ, চন্দ্রিমা, শেওড়াপাড়া এলাকায় পানি জমে গেছে। বৃষ্টির সময় ধানমন্ডি ২৭ এবং তেজগাঁওয়ে চলাচল করা গাড়িগুলো সড়কে স্থির বসে ছিল দীর্ঘ সময় ধরে।
মিরপুর ১০ নাম্বারে প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে কোমর পানি। প্রধান সড়কে চলাচল করা ব্যক্তিগত গাড়ির ভেতরেও পানি ঢুকে গেছে। ইঞ্জিনে পানি ঢুকে অনেক সিএনজি বন্ধ হয়ে গেছে রাস্তাতেই। এদিকে সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট যানজটে দীর্ঘসময় আটকা পড়েন অনেকে। এছাড়া, মিরপুর এলাকার ভেতরের সড়কগুলোতেও হাঁটু পানি। মিরপুর-১২ নম্বরের প্যারিস রোড, ঝুটপট্টি, রূপনগর, পল্লবীসহ বেশ কয়েকটি স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে।
শুক্রাবাদে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকেই বৃষ্টির কারণে অফিস থেকেই বের হতে পারেননি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টি হলেও পানি জমে থাকা এখন নিয়ম হয়ে গেছে। এই জলাবদ্ধতা দূর করতে সিটি করপোরেশন বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে লোক আসে না। ফলে বৃষ্টি শেষেও দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকে।
মিরপুর ১০ নম্বরের এক ফুটপাত ব্যবসায়ী বলেন, মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর একটা ব্যস্ত এলাকা। এইখানে সব সময় হাজার মানুষের আসা যাওয়া। বৃষ্টির পানি তো এইখানে জমতে দেওয়ারই কথা না। যতক্ষণ বৃষ্টি পড়ে কারও দেখা নাই। ঘণ্টা ধইরা বৃষ্টি হইয়া এলাকা ডুইবা গেলেও কেউ আসবো না। বৃষ্টি শেষ হইলে ১০-২০ মিনিট পর লোক আসে, ড্রেন পরিষ্কার করে। কিন্তু এই এলাকায় উচিত বৃষ্টি হইলে সাথে সাথে সিটি করপোরেশনের লোক পাঠানো। এইখানে পানি সব সময় ক্লিয়ার থাকবো।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী কয়েকদিন থেমে থেমে এই বৃষ্টি হতে পারে৷
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে ঝাড়খন্ড এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু উত্তরাংশে সক্রিয় এবং বাংলাদেশের অন্যত্র মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।