বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে বাদ পড়ার বিষয়ে মুখ খুলেছেন তামিম ইকবাল। তাকে পরিকল্পিতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে বলেই অভিযোগ ওপেনারের।
সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ টিম ভারতের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার পর আজ বুধবার বিকালে এক ভিডিও বার্তায় এমন অভিযোগই করলেন তামিম ইকবাল।
অবশ্য এর আগে দুপুরে নিজের ফেসবুক পাতায় পোস্ট দিয়ে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ‘সব কথা’ বলবেন বলে জানিয়েছিলেন।
বিশ্বকাপ টিমে বাদ পড়েছেন ১৭ বছরের গৌরবোজ্জ্বল ক্যারিয়ারের অধিকারী তামিম ইকবাল। মঙ্গলবার বিসিবি ওই বাংলাদেশ স্কোয়াড ঘোষণার পর থেকে এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে চলছে তর্ক-বিতর্ক।
ভিডিও বার্তায় তামিম বলেন, কেউ কেউ বলছে, আমি নাকি বলেছি ৫ ম্যাচের বেশি খেলব না। এটা মিথ্যা। আমি কখনো, কোথাও বলিনি ৫ ম্যাচের বেশি খেলব না।
বিকাল সোয়া ৫টায় নিজের ফেসবুক পোস্টে দেওয়া ভিডিও বার্তায় তামিম জানান, তাকে মিডল অর্ডারে খেলার অফার দিয়েছিলেন নির্বাচকরা। তবে সেটি গ্রহণ করেননি। তিনি ওপেনিংয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। তাই তাকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
তামিম বলেন, বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করে আমাকে বলল, ‘তুমি বিশ্বকাপে যাবা, কিন্তু তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাতে হবে। একটা কাজ করো, তুমি প্রথম ম্যাচ খেলিও না।’ আমি বলেছি, এখনো ১২/১৩ দিন সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে তো আমি ভালো অবস্থায় থাকব। তো কী কারণে খেলব না? তখন বলল, ‘আচ্ছা তুমি যদি খেলো তাহলে আমরা পরিকল্পনা করছি, তুমি নিচের দিকে খেলবা।
এমন প্রস্তাবে অবাক হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের প্রস্তাব শুনে আমি তো অবাক, জিজ্ঞেস করলাম এটা কোন ধরনের কথা। এরপর বলা হলো মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করানোর কথা। অথচ আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে খেলে আসছি। আমাকে জোর করে করে অনেক জায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে, ইচ্ছে করে। এটা ঠিক হলো এখন নতুন আরেকটা জিনিস বলি। এটা আমি অনুভব করেছি। এসব নোংরামি, আমি কোনো নোংরামির মাঝে থাকতে চাই না। আমার আসলে তিন কিংবা চারে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতা নেই। স্বাভাবিকভাবে কথাটি আমি ভালোভাবে নিইনি। আমি উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমি বিষয়টি পছন্দ করিনি। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমাকে জোর করে করে অনেক জায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে।
দেশসেরা এই ওপেনার আরও বলেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর মানসিকভাবে আমি খুব খুশি ছিলাম। গত চার-পাঁচ ম্যাচের যত বিষয় সব ভুলে গিয়েছিলাম। ম্যাচ শেষে আমার ইনজুরির অবস্থা ফিজিওকে জানাই। তখন ড্রেসিংরুমে নির্বাচকরা আসেন। আমি তাদের বলেছিলাম, আমার অবস্থা সামনে এমনই থাকবে। আমাকে দলে রাখলে বিষয়টি মাথায় রাখবেন। হোটেলে যাওয়ার পর আমাকে ফিজিও পর্যবেক্ষণ করেন।
‘ফিজিও’র রিপোর্টে ছিল প্রথম ম্যাচের পরে আমার ব্যথার অবস্থা কী, দ্বিতীয় ম্যাচের পর কী হয়েছে। সেক্ষেত্রে ২৬ তারিখের (নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচ) ম্যাচের দিন অবস্থা কেমন হতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী, খেলার জন্য আমি প্রস্তুত। তবে আমাকে বলা হয়েছিল আমি রেস্ট নিতেও পারি। শেষ ম্যাচটায় রেস্ট নিলে সেক্ষেত্রে আমার প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য রিহ্যাভ হয়ে যেত এবং বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচও আমি খেলতে পারব এমনটা ছিল রিপোর্টে। আমি কোথাও বলিনি যে, পাঁচটা ম্যাচ খেলবো বা পাঁচ ম্যাচ খেলতে পারব। এটা মিথ্যা। জানি না কীভাবে এটি মিডিয়াতে ছড়ানো হয়েছে। শুধু তিন নির্বাচককে জানিয়েছিলাম আমি ফিট না, দল ঘোষণার সময় যেন এটা মাথায় রাখেন।’
তামিম আরও বলেন, আমি কোনো কন্ট্রোভার্সি চাইনি। বিশ্বকাপের মাঝেও যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে, তাই যাতে কোনো ঝামেলা না হয় তাই আগেই জানিয়ে রেখেছিলাম। গত চার মাসে আমার সঙ্গে যা হয়েছে তার সবই পরিকল্পিত