শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’: রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে উঠবে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।

আজ ২৮ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দেশের এক ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারে শেখ হাসিনার জন্ম। শৈশব থেকেই তিনি দেখেছেন তাঁর পিতা বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব, সংগ্রামী জীবন এবং দেশ ও গণমানুষের রাজনীতি। যুক্ত হয়েছেন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনসহ বাঙালির অধিকার আদায়ের সকল লড়াই-সংগ্রামে।

universel cardiac hospital

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিনে তাঁকে (শেখ হাসিনা) জানান প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন । তিনি বলেন, জাতির পিতার কন্যা হওয়া সত্ত্বেও ছোটবেলা থেকেই শেখ হাসিনার জীবনযাপন ছিলো সহজ-সরল, সাদা-মাটা। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু কারাভোগকালে তিনি বঙ্গমাতার সহযোদ্ধা হিসেবে আগলে রাখতেন ছোট-ভাই-বোনসহ পরিবার পরিজনকে। তাঁর চলার পথ কখনো কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা সে সময় তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। মা, বাবা, ভাইসহ আপনজনদের হারানোর বেদনা বুকে ধারণ করে তাঁদেরকে পরবর্তী ছয় বছর লন্ডন ও দিল্লিতে চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলাসহ বহুবার তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতই প্রতিবার তাঁকে এসব বিপদ থেকে রক্ষা করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্ব, সাহসিকতা, বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলেই বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু আজ উত্তাল পদ্মার বুকে জাতির গৌরবের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনিই আমাদেরকে বিশ্বদরবারে আত্মবিশ্বাসের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস এনে দিয়েছেন। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়নের পথ ধরে কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো বৃহৎ প্রকল্পসমূহ সমাপ্তির পথে। দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে তিনি অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। গৃহহীনদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা, সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালুসহ জনকল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ দেশের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী রূপকল্প ‘ভিশন ২০২১’ এর সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ‘ভিশন ২০৪১’ কর্মসূচিসহ বাংলাদেশ ব-দ্বীপ মহাপরিকল্পনা (ডেল্টা প্ল্যান ২১০০) গ্রহণ করেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গড়ে উঠবে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদর্প বিচরণ দেশের সম্মান ও মর্যাদাকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া জি-২০ সম্মেলনসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা দেশকে মর্যাদার আসনে উন্নীত করেছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত ও নির্যাতিত লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেশে আশ্রয় দিয়ে তিনি বিশ্বমানবতার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ জন্য তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ অভিধায় ভূষিত হয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা, তথ্যপ্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়নসহ দারিদ্র্য বিমোচনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি দেশি-বিদেশি অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬-এ তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান ও ভূমিকা বিশ্বে আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, মুজিববর্ষ, স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত নানাবিধ অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী ও বন্ধু দেশসমূহের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণের ফলে এসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক-সহযোগিতার ক্ষেত্র আরো সম্প্রসারিত হয়েছে। করোনা মহামারির প্রভাবে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত ও সাহসী পদক্ষেপের ফলে সরকার করোনার প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, সুখ-সমৃদ্ধি ও অব্যাহত কল্যাণ কামনা করেন।

শেয়ার করুন