বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এখন নানান কথা বলা হয়। আমি শুধু বলব, একসময় এদেশে খাদ্যের অভাব ছিল প্রচন্ড, আমরা ঠিক মতো সকলকে খাবার দিতে পারি নাই, আমাদের না খেয়ে থাকতে হয়েছে। নিজের সংসার সামলিয়ে চলার জন্য আমাদের মায়েদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এখন জিনিস-পত্রের দাম অনেক বেশি এটি সত্য, কিন্তু দাম বেশি থাকা সত্ত্বেও কোনো মানুষ না খেয়ে নাই। এটি কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত এবং আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ক্রেডিট।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে জেলা শহরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কর্তৃক ১০০জন স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে গৃহস্থালি সামগ্রী প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমাদের এবং বাংলাদেশের মানুষের সৌভাগ্য যে আজ প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন আবার ঈদে মিলাদুন্নবী। এটি আল্লাহর একটি রহমত। চারদিকে ষড়যন্ত্র চলছে শেখ হাসিনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে। আপনারা সবাই শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন তিনি যে চেষ্টা করছেন সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার, সেই চেষ্টা যেন অব্যাহত থাকে।’
তিনি বলেন, করোনায় সারা পৃথিবীতে যে হারে মানুষ মারা গেছে, বাংলাদেশে কিন্তু সেই হারে মানুষ মারা যায়নি। এমনকি আমাদের এই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও করোনার সময়ে সরকারের তরফে থেকে যে সেবা দেওয়া হয়েছে সেই যথেষ্ট ছিল। আমাদের আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ দলের নেতাকর্মীরা এমন কোনো পরিবার নাই যেখানে সহযোগিতা পৌঁছায়নি। সবাইকে সহযোগিতা করেছেন। যেজন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে মৃত্যুর হার অনেক কম ছিল।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, পৌরসভায় অনেক কাজ আমরা পূরণ করতে পারিনি কিন্তু এটাও তো সত্য যে- মহামারি আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। এই ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় কোনো মৃত্যু নেই। এটি একটি বিশাল ব্যাপার।
প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, শেখ হাসিনা সরকার জনগণের জন্য নিবেদিত প্রাণ সরকার। এটি অস্বীকার করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের আগেও সরকার ছিল কিন্তু তারা জনগণের কল্যাণে কাজ করেনি। আওয়ামী লীগ জনগণের কথা চিন্তা করেই বিভিন্ন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা চালু করে। জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে, যেখানে প্রসূতি সেবা প্রদানসহ প্রায় ৩০ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কিন্তু বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে সেটি বন্ধ করে দেয়। কারণ তারা জনকল্যাণ চায় না। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আবার আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছি এবং নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করছি।
তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি, এটি অস্বীকার করার কিছু নেই। আমরা চেষ্টা করছি এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন, কিন্তু কিছু দুষ্ট প্রকৃতির ব্যবসায়ীদের জন্য এগুলো নিয়ন্ত্রণ এখনও করা যাচ্ছে না। তবে এগুলো নিয়ন্ত্রণে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোকতাদির চৌধুরী বলেন, কিছু লোক আছে, যারা নির্বাচনে আসতে চায় না, কিন্তু সারাদিন বলে বেড়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। আরে ভাই, তুমি যদি নির্বাচনে না আসো- তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনটা হবে কি হবে না, তুমি কীভাবে বুঝবে? এখানে পৌরসভায় যে নির্বাচন হয়েছে সেটিতে ভাদুঘরে বলতে গেলে আমরা ভোটই পায়নি, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে সেটি কীভাবে সম্ভব হলো? ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার বিপক্ষে বিএনপির যে ক্যান্ডিডেট ছিল, তিনি ৫০ হাজারের মতো ভোট পেয়েছিল,৷ যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হতো তাহলে ৫০ হাজার ভোট তিনি কীভাবে পেলেন? আমরা কারচুপি করলে তো সব ভোটই আমি পেতাম। এমনকি ৩/৪টি কেন্দ্রে আমি পরাজিতও হয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল বলেই আমি ফেলও করেছি, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল বলেই আমি পাশও করেছি। তারা নির্বাচনে কারচুপির মিথ্যা আওয়াজ তুলে একধরনের ষড়যন্ত্র করে, তারপরও আমাদের নেত্রী সব ষড়যন্ত্রের জাল ভেদ করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখন একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে আগামীতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে, একটি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হয়েছে, আগামীতে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হবে ইনশাআল্লাহ। আমি আজ ওয়াদা দিলাম।