দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর জিহাদ উদ্দিন (৩৫)। তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চেষ্টার কমতি রাখেনি পরিবার। তিনবার তাকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। বড় বোনকে হত্যার দায়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন তিনি।
গত ২১ আগস্টের ঘটনা। এদিন সন্ধ্যায় জিহাদ অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন। এটা দেখে তার বাবা মোখলেছুর রহমান (৭৬) ছেলের কাছে যান। এ সময় ছুরি নিয়ে বাবার দিকে তেড়ে আসেন জিহাদ। ছেলের হাতে থাকা ছুরিটি ধরে ফেললে বৃদ্ধ মোখলেছুরের হাতের চারটি আঙুল কাটা পড়ে। এরপরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন জিহাদ। তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন মোখলেছুর। একপর্যায়ে তিনি জিহাদকে ধাক্কা মারেন। এতে জিহাদ সিঁড়ির কাছে পড়ে যান। তাদের ধস্তাধস্তি দেখে এগিয়ে আসেন জিহাদের বড় বোন আয়েশা। এ সময় বোনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালান জিহাদ।
রক্তাক্ত আয়েশার চিৎকার শুনে অনেকেই এগিয়ে আসেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক আয়েশাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার দিনই ছেলে জিহাদকে অভিযুক্ত করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন মোখলেছুর রহমান। পুলিশ জিহাদকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বোন আয়েশাকে খুনের দায় স্বীকার করেছেন জিহাদ।
মোখলেছুর রহমান বলেন, আমি এক হতভাগ্য পিতা। অনেক চেষ্টা করেও ছেলেকে মাদকাসক্তি থেকে ফেরাতে পারিনি। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে নিয়েছি। তাতেও কাজ হয়নি। শেষে সে আমার মেয়েটাকেই খুন করল। আমার মেয়ের সোনার সংসার আজ তছনছ হয়ে গেল।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হিরামন বিশ্বাস। তিনি বলেন, জিহাদ কোনো কাজ করতেন না। বেশিরভাগ সময় বাসাতেই থাকতেন। কারও সঙ্গে তেমন একটা মেলামেশা করতেও দেখা যেত না। বহু বছর ধরে তিনি মাদকে আসক্ত।