কুয়েতে পার্ট টাইম কাজের সুযোগ কমেছে, কমেছে প্রবাসীদের আয়ও

মত ও পথ ডেস্ক

কুয়েত প্রবাসী

মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশ কুয়েত। দেশটির রাস্তাঘাট, দালাল ও অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের পাশাপাশি বাংলাদেশের শ্রমিকদের রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। সাধারণত বাংলাদেশিরা কোম্পানি ভিসায় কাজ করতে কুয়েতে যান।

বাড়তি আয়ের আশায় কোম্পানির নির্দিষ্ট সময়ের কাজ শেষে নিজ দক্ষতা অনুযায়ী অবসর সময়ে অন্যত্র (পার্ট টাইম) কাজ করেন অনেক প্রবাসী। তাদের আয়ের অন্যতম একটি অংশ উৎস ছিল। কিন্তু দেশটিতে বর্তমানে প্রবাসীদের পার্ট টাইম কাজের সুযোগ কমছে। ফলে কমছে বাড়তি আয়ের সুযোগও।

কুয়েতে নিজ আকামার বাইরে কাজ করা স্থানীয় আকামা আইনের লঙ্ঘন হিসেবে ধরা হয়। অন্যদিকে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে দেশটি। অভিযানে গ্রেপ্তারদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোসহ আইন অনুযায়ী জেল-জরিমানা কঠোর অবস্থানে রয়েছে দেশটির সরকার।

চলতি বছরের শুরু থেকে সাঁড়াশি অভিযানের ভয়ে নিজ কোম্পানির কাজ শেষে আগের মতো পার্ট টাইম কাজের খোঁজে বের হন না প্রবাসীরা। যে কারণে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের বাড়তি আয়ের উৎস। ফলে কমে গেছে আয়ও।

এছাড়া কিছু কোম্পানির বিভিন্ন সাইটের কন্ট্রাক বাতিল হয়ে যাওয়ায় কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন অনেক কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশি। দেশটির শ্রম আইন অনুযায়ী, কোনো কারণে অথবা নির্দিষ্ট সময়ের পরে কোনো কোম্পানির কন্ট্রাক বাতিল হয়ে গেলে শ্রমিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে হয়। এক্ষেত্রে নিজ কোম্পানিতে অথবা রিলিজ নিয়ে অন্য কোম্পানিতে আকামা নবায়ন করতে চাইলে সরকারকে নিদিষ্ট ফি প্রদান করতে হয় শ্রমিককে।

ভারত, নেপাল ও মিশরের শ্রমিকরা কম খরচে কুয়েতে আসে। তাই তারা ফিরে গিয়ে পুনরায় নতুন ভিসা নিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশিদের একবার কুয়েতে যেতে খরচ হয় ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা। ক্লিনিংসহ বিভিন্ন ভিসায় তাদের বেতন দেওয়া হয় ৭৫ কুয়েতি দিনার, যা বাংলা টাকায় প্রায় ২৬ হাজার। সব দিক বিবেচনায় একজন বাংলাদেশি শ্রমিকের জন্য শুধু কোম্পানির চাকরি করে জীবন ধারণ কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রবাসী বাংলাদেশি রবিউল ইসলাম বলেন, কোম্পানির কাজের পাশাপাশি আমরা অতিরিক্ত আয়ের জন্য বাইরে কাজ করি। যেহেতু আমাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে প্রবাসে আসতে হয়। বর্তমানে বাইরে অনেক চেক (তল্লাশি অভিযান) চলে, যে কারণে বাইরে যেতে পারি না, কাজ করতে পারি না। সে কারণে আমাদের আয়ও কমে এসেছে।

আরেক প্রবাসী ইসহাক আলী বলেন, আগে বাইরে পার্ট টাইম কিছু করতাম। পুলিশের ভয়ে কয়েকটি কাজ ছেড়ে দিয়েছি। যে কারণে আয় কমে গেছে। হাজার হাজার বাংলাদেশির ক্ষেত্রে এমনটি হচ্ছে।

বর্তমানে কুয়েতে বিভিন্ন পেশায় প্রায় দুই লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছে। যার বড় একটি অংশ স্থানীয় কুয়েতিদের বাসাবাড়ির কাজে, বিভিন্ন কোম্পানিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত।

শেয়ার করুন