কবি আসাদ চৌধুরী আর নেই

মত ও পথ ডেস্ক

কবি আসাদ চৌধুরী। সংগৃহীত ছবি

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম খ্যাতিমান ও জনপ্রিয় কবি আসাদ চৌধুরী আর নেই। তার জামাতা নাদিম ইকবাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কবির মৃত্যুর বিষয় উল্লেখ করে তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, মৃত্যু হায়নাদের মতো তাঁর পিছু লেগেছিল অনেকদিন ধরেই। তিনি ছিলেন সিংহরাজ। তিনি একটি মহান জীবন যাপন করেছেন! তার বিদেহী আত্মার জন্য দোয়া করবেন!

কবি আসাদ চৌধুরী বেশ কয়েক বছর ধরে কানাডায় ছেলে-মেয়ের সঙ্গে বাস করছিলেন। তিনি গত বছর নভেম্বর থেকে ব্লাড ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর কবির এনজিওগ্রাম করে দুটি ব্লকের ৯৯ ও ৮৮ শতাংশ সারানো হয়। ওইদিন তাকে কানাডার টরন্টোর পার্শ্ববর্তী শহর ওসোয়ার একটি হাসপাতালে আইসিইউ থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

সে সময় কবির জামাতা জানিয়েছিলেন, সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত আইসিইউয়ে থাকার পর কবিকে সিসিইউয়ে নেওয়া হয়। ফুসফুস ও হার্ট দুটিরই খুব ক্রিটিক্যাল অবস্থা।

কবি আসাদ চৌধুরী আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গী, টেলিভিশনে জনপ্রিয় সব অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও উপস্থাপনার জন্য পরিচিত। মৌলিক কবিতা ছাড়াও শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী এবং অনুবাদকর্মে তার অবদান প্রণিধানযোগ্য। ১৯৮৩ সালে তার রচিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। এছাড়া একই বছর তিনি সম্পাদনা করেন বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক গ্রন্থ “সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু”।

কবি আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।। ১৯৬০ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে তিনি উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকে যাওয়ার পর কলেজে অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে কবি আসাদ চৌধুরীর চাকরিজীবন শুরু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে তিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীকালে তিনি বিভিন্ন খবরের কাগজে সাংবাদিকতা করেছেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি ভয়েজ অব জার্মানির বাংলাদেশ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে যোগদান করে দীর্ঘকাল চাকরির পর এর পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন