ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৪০ জনে। এছাড়া বন্যায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ এবং তাদের সন্ধানে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা।
অন্যদিকে হিমালয়ার ছোট এই রাজ্যে আটকে পড়া পর্যটকদের হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে আনার কথা ভাবছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিপাতের পর সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় সিকিমে কমপক্ষে ৪০ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে সরকারি কর্মকর্তারা শুক্রবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন। এছাড়া উদ্ধারকারীরা এখনও নিখোঁজদের সন্ধান করছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনাক হ্রদের ওপরে মেঘভাঙ্গা বৃষ্টি হয় গত মঙ্গলবার ও বুধবার মাঝরাতের পরে। তার সঙ্গে গত কয়েকদিনের একটানা বৃষ্টিপাতও ছিল। মেঘভাঙা বৃষ্টি বলতে সাধারণত অতি ভারী বৃষ্টি, যা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় হয় তাকে বোঝায়।
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে, এক ঘণ্টায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১০ সেন্টিমিটার অথবা আধঘণ্টায় পাঁচ সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে সেটাকেই মেঘভাঙ্গা বৃষ্টি বা ক্লাউড বার্স্ট বলা হয়। মূলত সেই বৃষ্টিপাতের পর পার্বত্য সিকিম রাজ্যের লোনাক হ্রদ বুধবার উপচে পড়ে এবং এর ফলে বিশাল বন্যা দেখা দেয়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজ্যটির প্রায় ২২ হাজার মানুষের জীবনকে ক্ষতির মুখে ফেলেছে এই বন্যা।
রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিকিমের কর্মকর্তারা বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১৮ বলে জানিয়েছিলেন। তবে পার্শ্ববর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাজ্যের জরুরি পরিষেবার দলগুলো বন্যার পানিতে ভেসে আসা আরও ২২টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সিকিমের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছেন হাজারও পর্যটক। ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছে, এই অঞ্চলে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় তারা এখন হেলিকপ্টার ব্যবহার করে প্রায় ১৫০০ আটকা পড়া পর্যটককে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।