সিন্ডিকেট সন্ত্রাসীদের কারসাজি রোধে ৩ সপ্তাহ আগে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তা কার্যকর না হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে, বাজারে সিন্ডিকেট এখনো রয়েছে বহালতবিয়তে। বস্তুত সিন্ডিকেট ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ। সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের বাজারব্যবস্থা। বলা যায়, কোনো নিত্যপণ্যের ব্যবসাই এখন আর সিন্ডিকেটমুক্ত নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাজারে সিন্ডিকেটের কারসাজি চলছে, অসৎ ব্যবসায়ীরা অসাধু পন্থা অবলম্বন করে অতি মুনাফা লুটছে-এসব কি দেখার কেউ নেই? ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তেই পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কোনো পণ্যের আমদানিতে যতটা না দাম বাড়ছে, অসৎ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি। বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে কৃষিমন্ত্রীর ৮ অক্টোবরের সংবাদ সম্মেলনে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। তবে আমরা চেষ্টা করছি নিয়ন্ত্রণ করার। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা খুবই অসহযোগিতা করছে। তারা ঠিকমত সরবরাহ করছে না, এটা বড় অন্তরায়। নানাভাবে আমাদের কর্মকর্তারা মাঠ লেভেলে তাদের চাপ সৃষ্টি করলে সাপ্লাই-ই দেয় না, বন্ধ করে চলে যায়।’ আমরা মনে করি, এ প্রবণতা কোনোভাবেই চলতে দেওয়া যায় না। মনে রাখতে হবে, এই অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা অপরাধী, তাদের শক্ত হাতে দমন করা জরুরি। এটি করতে ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
তবে একথা সত্য যে, অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অদ্যাবধি দৃষ্টান্তমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলশ্রুতিতে দিন দিন তাদের লোভ বাড়ছে, তারা হয়ে উঠছে বেপরোয়া দানবে। বাজার মনিটরিংয়ের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে কোনো বাজারেই এ ধরনের তৎপরতা দৃশ্যমান নয়। এমতাবস্থায়, বাজার তদারকি সংস্থার উদ্দেশে আমরা বলতে চাই, নিত্যপণ্যের প্রতিটি বাজারে নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থা করুন। সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে অসৎ ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা করে আইনের আওতায় আনুন। পাশাপাশি টিসিবিকে সক্রিয় করুন। এগুলো করতে পারলেই কেবল বন্ধ হবে অতি মুনাফাখোরদের দৌরাত্ম্য। আর তা না পারলে সেটা বাজার তদারকি সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা বলে পরিগণিত হবে। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠবে সংশ্লিষ্টদের সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে। সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধেই নিতে হবে ব্যবস্থা।