ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ : জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাইলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট

মত ও পথ ডেস্ক

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ফাইল ছবি

গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলা থামাতে জাতিসংঘের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সোমবার এ ব্যাপারে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে তিনি টেলিফোন করেছিলেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি বার্তাসংস্থা ওয়াফা।

টেলিফোনে গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বোমাবর্ষণ থামানোর জন্য জরুরিভিত্তিতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার জনগণের জন্য চিকিৎসা ও ত্রাণ সামগ্রী আসার পথ সুগম করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণেরও অনুরোধ জানিয়েছেন মাহমুদ আব্বাস। যদি দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয় সেক্ষেত্রে শিগগিরই গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় শুরু হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট।

মাহমুদ আব্বাসের উৎকণ্ঠার জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘ গাজা উপত্যকায় জরুরি মানবিক সহায়তা সামগ্রী পাঠানোর জন্য সারক্ষণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ ও সহিংসতা বন্ধেও জাতিসংঘ নিরলস ভাবে কাজ করছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।

গাজায় বর্তমানে ইসরায়েলি বাহিনী যে হামলা চালাচ্ছে, তা মূলত ইসরায়েলে গাজার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়া। শনিবার ভোররাতে দক্ষিণ ও মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়া শুরু করে গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এবং হামাসের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সূর্যের আলো পুরোপুরি ফোটার আগেই ৩ হাজারেরও বেশি রকেট ছোড়া হয়েছিল ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামকির স্থাপনা লক্ষ্য করে।

কাছাকাছি সময়ে হ্যাং গ্লাইডার ও মোটরচালিত গ্লাইডারে চেপে হামাসের বেশ কয়েকজন যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমাণ্ডের কার্যালয়ে গিয়ে সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের বন্দি ও জিম্মি করার পাশাপাশি ওই কমান্ডের সঙ্গে সেনাবাহিনীর মূল কমান্ড ও অন্যান্য শাখার কার্যালয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মোটরসাইকেল ও জীপে করে সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করেন আরও কয়েক শ’ যোদ্ধা।

রয়টার্সের অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত দুই বছর পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির পর শনিবার এই হামলা চালিয়েছে হামাস এবং এই ‘অপারেশনের’ জন্য গত ২ বছরে অন্তত ১ হাজার যোদ্ধাকে গোপনে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়েছে গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী এই সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী।

তথ্যের ঘাটতি ও পূর্বপ্রস্তুতি না থাকার কারণে হামাসের হামলার পর প্রথম দিকে খানিকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ছিল ইসরায়েল। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই যুদ্ধে পূর্ণ শক্তিতে ফিরে আসে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাবাহিনী ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, শনিবার থেকে এ পর্যন্ত চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলে অন্তত ৯০০ জন এবং গাজায় ৬৫০ জনেরও অধিক সংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন।

৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০ কিলোমিটার প্রস্থ গাজা ভূখণ্ড একসময় মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন দল ফাতাহের নিয়ন্ত্রণাধীনে ছিল। পরে ২০০৭ সালে ফাতাহকে উচ্ছেদ করে এ ভূখণ্ডের দখল নেয় হামাস।

শেয়ার করুন