বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ করা একটি কঠিন ব্যাপার। আওয়ামী লীগ একটি সহজ দল নয়। জন্মে থেকে মার খেতে খেতে আওয়ামী লীগ আজকের এই অবস্থায় এসেছে। সেই আওয়ামী লীগের সাথে নিজেকে যুক্ত করা সেটিও একটি দুঃসাহসী কাজ, যেটি আল-মামুন সরকার করেছিলেন। অনেকেই আছেন, নিজের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরে আর রাজনীতিতে যুক্ত হন না।কিন্তু মামুন সেই পথটি বেছে নেননি। ছাত্রজীবনে ঠেঙ্গারি বাহিনীর হাতে অনেক হেস্তনেস্ত হয়েছেন, অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তারপরেও ছাত্রজীবন শেষে রাজনীতির পথেই হেঁটেছেন তিনি।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের স্মরণে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আল-মামুন সরকারের মৃত্যু আমাদের কাছে একটি আকষ্মিক বিষয় ছিলো। এরকম একটি দুর্ঘটনার ঘটবে, আমরা এটি কখনো আশা করিনি। তিনি শুধু জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কিংবা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, শুধু এমনটি নয়, তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো- তিনি কিশোর অবস্থায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছেন।নিজের দেশের মুক্তির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দেওয়ার এই সুযোগ আগামী হাজার বছরেও কারো জীবনে আসবে না।
তিনি বলেন, মামুনের একটু ব্যতিক্রমধর্মী রাজনীতি ছিল। এই ব্যতিক্রমধর্মী রাজনীতির মধ্যে যেটার সাথে আমরা অনেক রাজনৈতিক কর্মী যুক্ত হই না। সেটা হলো আমরা মুখে দুস্ত মানুষের কথা বলি, কিন্তু আমরা কখনো নিজে সরাসরি তাদের দুঃখ, নিপীড়নের শরীক হই না। এই কাজটি মামুন করেছিলেন। এই শহরের অনেকগুলো দুস্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত সংগঠনগুলোর সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে যে ক্ষতি হয়েছে সেটি অপূরনীয়।
আগুন-সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে শেষ পরিণতি ভোগ করতে হবে: আহম্মদ হোসেন
শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে নেবে। তবে আগুন-সন্ত্রাস করলে বিএনপি-জামায়াত জনগণের কাছ থেকে রক্ষা পাবে না। তাদের শেষ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আহম্মদ হোসেন বলেন, বিদেশে ঘুরে লাভ নেই, বিদেশিরা ক্ষমতায় উঠাতে পারবে না। দেশের মূলশক্তি হচ্ছে জনগণ। তারা সিদ্ধান্ত নেবে কারা ক্ষমতায় থাকবে।
তিনি বলেন, মাছ যেমন পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনি একটি গণতান্ত্রিক দল নির্বাচন ছাড়া বাঁচতে পারে না। এ কথা বিএনপির অনুধাবন করা উচিত।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আহম্মদ হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সৈনিকেরা যুদ্ধে গিয়ে হেরে আসেন না, হারতেও জানেন না। সামনে অগ্নি পরীক্ষা, সেই পরীক্ষায় আবার জিততে হবে। চ্যালেঞ্জিং এই সময়ে মরে যাব, তবে গণতন্ত্রকে খুন করতে দেব না। পাকিস্তান মার্কা স্বাধীনতা আনতে দেব না। সরকার বহির্ভূত কোনো সরকার আসতে দেব না।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি হাজি মো. হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু।
এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়া, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু।
এ সভায় জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শোকসভার শুরুতেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারের প্রয়াণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয় এবং আলোচনা শেষে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এসময় মোনাজাত পরিচালনা করেন মাও.আবদুল্লাহ।