বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পেছনে ফেরার আর সময় নেই। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চূড়ান্ত লড়াই শুরু হবে। এখন একটাই লক্ষ্য সরকারের পতন। এজন্য দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে সরকারকে পরাজিত করা হবে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘কোনো শর্ত দিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হবে না’ ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনারা কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ক্ষমতায় বসে আছেন। আপনাদের পদত্যাগ করতে হবে আগে। কারণ আপনারা অবৈধ। আপনাদের মুখে রাম নাম মানায় না। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জোর করে দেশ চালাচ্ছেন।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যেভাবে আটকে রাখা হয়েছে সেটা অন্যায়, অবৈধ। এজন্য একদিন না একদিন জবাবদিহি করতে হবে আপনাদের। বিশেষ করে যে বিচারকেরা ফরমায়েশি রায় দিয়েছেন।
শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলার জন্যই দলের কেন্দ্রীয় নেতা এ্যানিকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, কথা বললে কথা শুনতেও হবে। বেগম জিয়াকে নিয়ে কথা বললে তার নেতাকর্মীরা চুপ থাকতে পারে না।
আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হতে তরুণ, যুুবসমাজসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবার ভোট চোরের কোনো ক্ষমা নেই। চুরি করতে দেওয়া হবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনেই হবে নির্বাচন।
সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও একই সুরে কথা বলেন। তিনি বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে আন্দোলন শুরু হবে। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তারা বলছেন— তলে তলে বা মুরুব্বির সঙ্গে কথা হয়েছে তারা এমনটি বললেও আমরা বলছি না। আমরা বলি আমাদের মূল শক্তি জনগণ।
বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে জনগণ ধিক্কার দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ভয় পায় সরকার। এমনকি জনগণকেও ভয় পায়। তাই সবাইকে জেলে ভরে একতরফা নির্বাচনের অপচেষ্টা করছে।
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ক্ষমতাসীনরা শেষ মরণ কামড় দেবে। তবে, আমরাও জানি কীভাবে দাত ভেঙে দিতে হয়। এবার যুদ্ধ হবে সামনাসামনি। সবাইকে তাই যুদ্ধের প্রস্তুতি রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা প্রায়ই রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দেন। সংবিধান কাউকে ভোট চুরি করতে বলেনি। বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করতে অনুমতি দেয়নি। কিন্তু সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে বিরোধীদলকে নির্যাতন করেই চলেছে। কথা পরিষ্কার সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক বিল আনতে হবে। এছাড়া কোনো আপস নেই।
সভাপতির বক্তব্যে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, খালেদা জিয়ার কিছু হলে সারাদেশে আগুন জ্বলবে। দেশকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ অন্যরা। সারাদেশ থেকে যুবদলের নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশ নেন।