মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি মালিকানায় পরিচালিত অবৈধ বিনোদন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়েছে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মালয়েশিয়ায় এই ধরনের বিনোদনকেন্দ্রগুলোকে বাংলাদেশিরা মুজরা বলে। এসব মুজরায় বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নারীদের পাচার করা হয় নাচের জন্য। এই বিনোদনকেন্দ্রগুলোর গ্রাহক মূলত বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি নাগরিক।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির উপ-পরিচালক রুশদি মো. ইসা বলেন, ১৫ অক্টোবর রাত ২টা ৩০ মিনিট থেকে এই অভিযান শুরু করা হয়। ওই কমপ্লেক্সে প্রায় ১ বছর ৩ মাস ধরে এই অশ্লীল নৃত্যের ক্লাব চলছিল। অ্যান্টি-হিউম্যান ট্রাফিকিং অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট স্মাগলিং ডিভিসন, সিআইডি এবং বুকিত আমান পুলিশ যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করে।
রুশদি মো. ইসা বলেন, রাজধানী কুয়ালালামপুরে জালান দাং ওয়াঙ্গির উইলাইয়াহ কমপ্লেক্সে চারটি মুজরা বা স্ট্রিপস ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। যার প্রত্যেকটির মালিকানা বাংলাদেশিদের। এসব ক্লাবে বিদেশি নারীরা অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শন করত। যার মূল দর্শনার্থী বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিরা।
প্রাথমিকভাবে মানবপাচার সংশ্লিষ্ট তদন্তের অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানান তিনি। রুশদি জানান, এই ক্লাবগুলো সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরের দিন ভোর ৭টা পর্যন্ত পরিচালিত হতো। এখানে মঞ্চে থাকা নারীদের শরীরে টাকা ছুড়তেন দর্শনার্থীরা। যিনি বেশি টাকা ছুড়তেন তার জন্য নৃত্য করতেন এবং বিনোদিত করতেন।
রুশদি আরও জানান, দুটি মুজরার বাংলাদেশি ম্যানেজার এবং একজন কর্মচারীকে ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট এর ৫৫বি ধারায় আটক করা হয়েছে।
এছাড়াও ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ৬(১) (সি) ধারায় এসব মুজরা থেকে ৩৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১ জন পাকিস্তানি নাগরিককে আটক করা হয়। তারা সবাই অবৈধ বিনোদন কেন্দ্রগুলোর গ্রাহক।
এ সময় মুজরাগুলো থেকে ৩৪ নারীকে উদ্ধার করা হয়। তারা মুজরায় জিআরও (গেস্ট রিলেশনশিপ অফিসার) হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। তাদের সবার কাছে সঠিক কাগজপত্র পাওয়া যায়, তবে ইমিগ্রেশন অধিকতর তদন্ত করবে।
এই আউটলেটগুলোর মালিকানা, পরিচালনা, কর্মচারী, নৃত্যের মেয়ে এবং গ্রাহক, সবাই বাংলাদেশি। এই ধরনের ব্যবসার বিদেশিদের সম্পৃক্ততা নিয়েও তদন্ত করা হবে বলে জানান রুশদি।