অশান্তি করতে এলে খবর আছে: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

‘আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ মানে অশান্তি করছে’, বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজকে বিএনপি এ কথা কয়েকবার উচ্চারণ করেছে। তাহলে ঘোষণা দেন যে অশান্তি চান। অশান্তি কাকে বলে দেখিয়ে দেবো। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় আমরা আছি, আমরা কেন অশান্তি করবো? ক্ষমতায় আছি মানুষের সেবা করার জন্য, আমরা অশান্তি করার জন্য আসি নাই।’

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

universel cardiac hospital

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা অশান্তি সৃষ্টি করছি না। আমরা অশান্তি সৃষ্টি করলে এই নগরীর কোথাও বিএনপি দাঁড়াতে পারতো না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফখরুল সাহেব মাইক, একটা মুখে দিয়ে, আরেকটা আছে… (রুহুল কবির রিজভী) বসে বসে কী জঘন্য ভাষায় আমাকে গালাগালি দেওয়া, আমার কথা বাদ দিন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে কী অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করছে। আমরা প্রতিশোধ নিলে আরেকটা ১৫ আগস্ট ঘটানোর হুমকি দিতে পারতেন না।

২৮ অক্টোবর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশের বিষয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি একটি উত্তাল জনসমুদ্র দেখতে চাই। বঙ্গোপসাগরের মতো গর্জন দেখতে চাই। পারবেন না? সেরকম একটা জনস্রোত সেই দিন আমরা ঢাকায় দেখাতে চাই।’

তিনি বলেন, অশান্তি করবো না। তবে কেউ যদি অশান্তি করতে আসে, খবর আছে। খবর এতদিন বলি নাই। অনেক সহ্য করেছি, সহ্যেরও একটা সীমারেখা আছে। শেখ হাসিনাকে নিয়ে যেসব দাবি-দাওয়া আপনারা করেন, এই অভদ্র লোকদের কী শাস্তি হওয়া উচিত! আমরা কারও সভায় অশান্তি করবো না। তবে অশান্তি হলে তখনকার পরিস্থিতি বলে দেবে—অশান্তি কাকে বলে। এবার ছাড় নেই। অশান্তির পথ দেখালে অশান্তি আপনাদের দিকেই আসবে। সেই পথ আওয়ামী লীগকে দেখাবেন না। ভয়-ডর এগুলো আমরা পায়ের তলে ফেলে এসেছি বহুবার।

গত এক বছর ধরে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অশান্তি চাইলে এতগুলো সমাবেশ করতে পারতো। ক্ষমতাসীন দল হয়ে দলের কর্মীরা ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছে। অবলা নারী, শিশুসহ হত্যার কারণে আওয়ামী লীগের মনে অনেক বেদনা আছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান।’

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে মারা যাওয়ায় শেখ হাসিনা শোক জানাতে গিয়েছিল, কর্ণপাত করেনি। একুশে নভেম্বর শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। সেই দলের সঙ্গে কীভাবে সমঝোতা করি? আওয়ামী লীগের আমলে কি বিএনপির কোনও নেতাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে?

বিএনপি আবারও ভুল পথে হাঁটছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দিনক্ষণ তারিখ দিয়ে আন্দোলন হয় না। দিনক্ষণ দিয়ে আন্দোলনের ডাক দিলে সেই আন্দোলন খাদে গিয়ে পড়ে। যারা গণতন্ত্রকে গলা টিপে মেরেছে, সেই দলের লজ্জা হওয়া উচিত। ২৮ তারিখ বিএনপি নাকি ৪০ দল নামবে।

তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা এখনই আসা শুরু করেছে। কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করছে। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে উঠছে। কার আত্মীয় কে, এটাও খবর নেওয়া উচিত। এত আত্মীয় কোথা থেকে এলো ঢাকা শহরে? ২৫ তারিখের আগেই সবাই আসবে। তারপরে গাড়িতে আসার চিন্তা তাদের কম। এখনই সব এসে যাচ্ছে। সবাইকে ডাক দিচ্ছে। তারপর ৪০ দল মিলে অবরোধ করবে, রাস্তা দখল করবে। স্বপ্নরে স্বপ্ন, কত স্বপ্ন, রঙিন খোয়াব। ফাঁপা বেলুন চুপসে যাবে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিটি রাস্তায় হাঁটতেও যেন আওয়ামী লীগ, সামনে আওয়ামী লীগ, পেছনে আওয়ামী লীগ, সারা সিটিতে আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ…।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে বিশেষ বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

শেয়ার করুন