রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালান কঠোর নিরাপত্তায় সফলভাবে ঢাকা থেকে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছেছে। ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালান ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে গাড়ি বহর প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করলে প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর এবং প্রকল্পে কর্মরতরা গাড়ি বহরকে স্বাগত জানায়।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অলক চক্রবর্তি জানান, বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে রাশিয়া থেকে পূর্ববর্তী চারটি চালানের মতোই বিশেষ বিমানে ঢাকায় পৌঁছে ইউরেনিয়াম। শুক্রবার ভোরে এ চালান ঢাকা থেকে সড়ক পথে রওনা হয়ে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছেছে।
ঈশ্বরদীর থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান সড়কপথে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রূপপুরে পৌঁছে। সড়কপথে ইউরেনিয়ামের চালানবাহী গাড়ি বহর আসার সময় কিছুক্ষণের জন্য সড়কে অন্যান্য যান চলাচল বন্ধ ছিল।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম, ৬ অক্টোবর দ্বিতীয়, ১৩ অক্টোবর তৃতীয় ও ২০ অক্টোবর ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান ঢাকা থেকে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছে। মোট সাতটি চালানের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আরও দুটি চালান দেশে আসবে। মোট সাতটি চালানে আসা জ্বালানি দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছর ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
জানা গেছে, রূপপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে জ্বালানি ব্যবহার হবে চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া ৩ বছর বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। প্রতিদিন জ্বালানির প্রয়োজন হয় না। একবার জ্বালানি লোডের পর প্রথম তিন বছরের জন্য বছরে একবার করে (এক-তৃতীয়াংশ) ও পরবর্তী সময়ে দেড় বছর পর পর জ্বালানি পরিবর্তন করতে হবে। ফলে জ্বালানির কারণে দেশের অন্যান্য কেন্দ্র যেভাবে বন্ধ থাকে, এখানে ওই ধরনের কোনো সংকট হবে না। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতেই ধারাবাহিকভাবে চালানের জ্বালানি রাশিয়া পাঠিয়ে দিচ্ছে।
দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থের ১০ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার। ঋণ সহায়তা হিসেবে রাশিয়া ৯০ শতাংশ দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও রাশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটি দেশের প্রথম ও একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।