সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে বিএনপির একটাকেও ছাড় নয়: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি মাঠে নেমেছে ভালো কথা। কিন্তু কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে বিএনপির একটাকেও ছাড় দেওয়া হবে না, একটাকেও না। সেটা কী করতে হবে আমাদের জানা আছে। তারা দেশের কোনো উন্নয়ন করতে পারছে না। তারা দেশের মানুষকে পরোয়া করে না। বিএনপির হাতে দেশের ভবিষ্যত নেই।

বৃহস্পতিবার বিকালে বেলজিয়ামে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কর্তৃক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব বলেন। ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রীর আবাসস্থল ভার্চুয়াল মিটিং রুম থেকে লুমেন কমিউনিটি অডিটোরিয়াম পান্তে যুক্ত হয়ে তিনি বক্তব্য দেন।

বিএনপি দেশের কোনো উন্নয়ন করতে না পারলেও দেশের উন্নয়নকে ধ্বংস করতে পারে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি কর্নেল রশিদকে সংসদ সদস্য করে। তার সঙ্গে আরও একজনকে সংসদ সদস্য বানায়। বিএনপির দেশের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে।

বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ সুবিধার আহ্বান: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গকে ইবিএ (অস্ত্র ছাড়া সবকিছু) পরিকল্পনার আওতায় ২০৩২ সাল পর্যন্ত দেশ দুটির বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশ সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘উত্তরণকে শাস্তি নয় বরং পুরস্কৃত করতে ২০২৯ সালের পরিবর্তে ২০৩২ সাল পর্যন্ত ইবিএ সুবিধা অব্যাহত রাখুন।’

মোমেন বলেন, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু এবং লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এফপিএস চ্যান্সেলারিতে এবং বাসভবনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এ আহ্বান জানান।

বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারী এবং যুদ্ধের জন্য সমস্যায় রয়েছে। তিনি বলেন, সুতরাং, আমরা চাই আপনাদের দু’টি দেশই ২০২৯ থেকে আরও তিন বছরের জন্য ইবিএ সুবিধা অব্যাহত রাখুন, কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সুবিধা আমাদের উন্নয়নের জন্য সহায়ক হবে।

প্রধানমন্ত্রী বেলজিয়ামকে বাংলাদেশে বিশেষ করে ওষুধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং জাহাজ নির্মাণে বৃহত্তর বিনিয়োগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনি নবায়নযোগ্য শক্তির পাশাপাশি জাহাজ নির্মাণ খাতে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। আমরা এখন জাহাজ তৈরি করছি, আপনি আমাদের কাছ থেকে উচ্চমানের জাহাজ তৈরি করিয়ে নিতে পারেন।

উভয় নেতা ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছেন। দুটি দেশই এই খাতে অনেক সমৃদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ১১৭টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। ব্যাংকিং খাতে ভালো হওয়ায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে তাদের দক্ষতা বিনিময়ের মাধ্যমে পরিণত করতে লুক্সেমবার্গের প্রতি আহ্বান জানান। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক থাকায় তিনি লুক্সেমবার্গের কাছ থেকে আরও সহযোগিতা চেয়েছেন।

মোমেন বলেন, বৈঠকে বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও ব্যবসা বাড়াতে শিগগিরই বাংলাদেশ ও লুক্সেমবার্গের মধ্যে একটি এয়ার সার্ভিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে।

এছাড়া বৈঠকে আইসিটি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন