চলতি (২০২৩-২৪) অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক বা তিন মাস অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আলোচ্য সময় ১৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও, রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ১৯৫ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৪ হাজার ৯৪৬ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৭৬ হাজার ৭৫১ দশমিক ৩০ কোটি টাকা। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ দশমিক ৩৪ বেশি। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে আদায় হয়েছিল ৬৭ হাজার ১২৭ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা।
রাজস্ব বোর্ডের তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে আয়কর খাতে। এই খাতে ঘাটতির পরিমাণ ৩ হাজার ৫২৬ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির পরও ভ্যাটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫৪ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা। আর আমদানি ও রপ্তানি শুল্কে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১৪ দশমিক ১০ কোটি টাকা।
গত বছরের তুলনায় আলোচ্য সময়ে ভ্যাটের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আয়করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ আর শুল্কে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
রাজস্ব সংশ্লিষ্টদের মতে ভ্যাটের ওপর ভরসা করে এ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। দেশে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। আর মূল্যস্ফীতির কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম দ্বিগুণ থেকে ক্ষেত্র বিশেষে কয়েকগুণ বেড়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভ্যাট আদায়ে। এ কারণেই গত কয়েক বছরের তুলনায় ভ্যাট আদায় রেকর্ড হারে বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুল্ক খাতে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ভালো না হলেও লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশেরও বেশি আদায় করেছেন শুল্ক কর্মকর্তারা। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে শুল্ক খাতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। এ সময়ে শুল্ক বিভাগ আদায় করেছে ২৪ হাজার ১২৭ দশমিক ৯০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১ হাজার ১৩৬ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ২৮ হাজার ৯৮২ দশমিক ২৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ ভ্যাট আদায়ে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫৪ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আয়কর বিভাগের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে আয়কর বিভাগ আদায় করেছে ২৩ হাজার ৬৪১ দশমিক ১৫ কোটি টাকা।
আয়কর কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণত রিটার্ন দাখিলের সময় সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণ হয়। তাই চলতি সময়ে একটু কম রাজস্ব আহরণ কম হয় বলেও মনে করেন আয়কর কর্মকর্তারা।