খেলার মাঠে তো বটেই, রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে রাউন্ড রবিন লীগে আজ একমাত্র ম্যাচে এই দল দুটো মুখোমুখি হচ্ছে। কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে দিবারাত্রির এই ম্যাচটি।
প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দারুণ মিল। হাতে হাত রেখে যেনো পেছনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দল দুটো। উভয় দলই বিশ্বকাপ মিশন জয়ে শুরু করেছিল। কিন্তু তারপর ছন্দপতন। একের পর এক হার। বাংলাদেশ হারের মিশনটা একটু আগে শুরু করেছে। পাকিস্তান একটু পরে। দুই দল মিলে টানা ৯ ম্যাচ হেরেছে।বাংলাদেশ টানা পাঁচ ম্যাচ, পাকিস্তান হরেছে টানা চার ম্যাচ। আজ অবশ্য একটা দল এই হারের সীমানা থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। আর স্বাভাবিকভাবেই অন্য দলকে সেই হারের বৃত্তে ঘুরপাক খেতে হবে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মুখোমুখি হলে সবার আগে চোখে ভেসে উঠে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটাঙ্গনকে দারুণভাবে চমকে দিয়েছিল টাইগাররা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল সুজনরা। আজ আবার বিশ্বকাপের ম্যাচের আগে ঘুরেফিরে সেই প্রশ্ন-বাংলাদেশ আরো একবার চমক দেখাতে পারবে?
মূলত টানা পাঁচ হারে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শেষ। সেমিফাইনালের যে স্বপ্ন নিয়ে টাইগাররা বিশ্বকাপে এসেছিল তার ইতি হয়েছে। শেষ চারের স্বপ্ন তো শেষ, এখন শীর্ষ আটে না থাকতে পারলে বড় ধরনের ধাক্কা হজম করতে হবে।
২০২৫ সালে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর বসবে। সেই টুর্নামেন্টের বাছাই পর্ব এই বিশ্বকাপ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে হলে শীর্ষ আটে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। সে বিচারে আজকের ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আজকের ম্যাচের পর বাংলাদেশের সামনে আর মাত্র দুটো ম্যাচ বাকি থাকবে । সে দুই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া।
পাকিস্তানের অবশ্য সে দুঃশ্চিন্তা নেই। স্বাগতিক হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ পাবে তারা। তবে ১৯৯২ সালের চ্যাম্পিয়ন সামনে এখনো সেমিফাইনালের সম্ভাবনা টিকে রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে তাদের সবগুলো ম্যাচই জিততে হবে। সেই মিশনের প্রথম প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। আজ তারা জিততে না পারলেও বিশ্বকাপের পরবর্তী ম্যাচগুলো তাদের জন্যও নিয়ম রক্ষার হয়ে উঠবে।
উভয় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে দুই দলেই একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে। বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কিছুটা ইনজুরি আক্রান্ত। গতকাল অনুশীলনে ঘাড়ে ব্যথা পেলেও পরবর্তীতে অনুশীলন করেছেন। অন্যদিকে পাকিস্তান দলে রান খরায় ভুগছেন ইমাম উল হক। ফলে আবার ফিরতে পারেন ফখর জামান। ইনজুরির কারণে শাদাব খান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বল করেননি। ফলে উসামা মীর আবার ফিরতে পারেন।
বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস ম্যাচ এ মাঠেই হয়েছিল। লো স্কোরিং ম্যাচ ছিল সেটা। আজও তেমন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তবে বাংলাদেশ দলে রয়েছে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা সেরা চার ব্যাটারের তিনজন। মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। ফলে একটা রান বন্যার ইনিংসও দেখা যেতে পারে।
পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচে দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ
বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য)
লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম/শেখ মেহেদি, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।
পাকিস্তানের একাদশ (সম্ভাব্য)
আব্দুল্লাহ শফিক, ইমাম উল হক/ফখর জামান, বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান, সৌদ শাকিল, ইফতিখার আহমেদ, উসামা মীর, মোহাম্মদ নেওয়াজ/সালমান আলী, শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র ও হারিস রউফ।