জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে আলোচিত ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩’। বিলে আনসার বাহিনীকে আটক বা তল্লাশির ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বৃহস্পতিবার বিলটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।
গত ২৩ অক্টোবর সংসদে বিলটি তোলা হয়েছিল। সেখানে আনসার ব্যাটালিয়নকে আটক ও তল্লাশির ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিলো, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বিলটির এ সংক্রান্ত ধারা সংশোধনের সুপারিশ করে।
বিলের ৮ ধারায় বলা হয়েছিল, …কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্রমতো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি; কোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।
এই বিল উত্থাপনের পর বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উদ্বেগ জানান। এ প্রস্তাবকে ‘ভয়াবহ দুশ্চিন্তার ও আতঙ্কের বিষয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পুলিশের পক্ষ থেকেও এই বিল নিয়ে ‘আপত্তি’ জানানো হয় বলে খবর প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
বৃহস্পতিবার পাস হওয়া বিলে ব্যাটালিয়ন সদস্যদের এখতিয়ার ও ক্ষমতা সম্পর্কিত এই ধারায় বলা হয়েছে, “….কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য তার সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
বিলে আরও বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সংঘটিত অপরাধের বিচার করার জন্য সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত গঠন করা যাবে এবং বিদ্রোহের মতো অপরাধের বিচার করার জন্য বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত গঠন করা যাবে।
‘এই বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতে বিদ্রোহের মত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া যাবে।’
মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের ৯০ দিনের বেশি কারাদণ্ড হলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত হবেন বলে বলা হয়েছে।