তফসিল যে কোনো সময়, ধৈর্য ধরা প্রয়োজন: কূটনীতিকদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।ফাইল ছবি

যে কোনো সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে জানিয়ে কূটনীতিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, এ সময় একটু ধৈর্য ধরা প্রয়োজন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের মন্তব্য সরকার পছন্দ করছে না বলেও জানান তিনি।

আজ বুধবার ঢাকায় নিয়োজিত বিদেশি কূটনীতিকদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে প্রতিনিয়ত মন্তব্যের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে সৌদি আরব সফর শেষে প্রতিমন্ত্রী আজ সকালে দেশে ফেরেন। বিকেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

universel cardiac hospital

এক সাংবাদিক প্রশ্নে বলেন, সরকার অনেকবার ভিয়েনা সনদের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূতদের তাদের সীমার মধ্যে দায়িত্ব পালন করার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। তারপরও তারা অবাধ বিচরণ করছেন। যে কোনো কিছুতে বিবৃতি দিচ্ছেন। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের বিষয়ে তাদের চিঠি পাঠানো এবং ব্রিফ করার পরও তাদের পক্ষ থেকে বক্তৃতা ও বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে। সরকার এটাকে চাপ মনে করছে কি না! আর রাষ্ট্রদূতদের সীমার মধ্যে থাকার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হবে কি না।

জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটাকে তো আমরা চাপ কখনোই বলি না। অতীতেও বিষয়টি বলেছি। অতীতের উদাহরণ টেনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের ও পরের পরিস্থিতি…। খুবই দুঃখজনক হলেও সত্য।

কূটনীতিকদের তৎপরতায় সরকারের অসন্তুষ্ট হওয়ার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমরা পছন্দ করি না, এটা হলো প্রথম কথা। তারপরও তাদের আমরা কালচারাল স্পেস দিয়েছি। কারণ, এই কালচার (সংস্কৃতি) বাংলাদেশে আছে অনেক দিন থেকেই। কিন্তু আমরা চাই, সামনের দিনে এই কালচার থেকে সরে আসবেন (কূটনীতিকেরা)। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশই নেবে।

এ প্রসঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনামুখর দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ওই সব দেশের প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা আছে ৭০ শতাংশ কিংবা তারও বেশি। অপর দিকে সেই সব রাষ্ট্রে এসব সংস্থা জরিপ করে দেখছে যে তাদের দেশের (যেসব দেশ বাংলাদেশের সমালোচনায় মুখর) অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে পড়ছে বলে মনে করছেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ।

‘এমন পরিসংখ্যানও কিন্তু উঠে এসেছে। তো এখানে যে (তাদের) নৈতিক ভিত্তি (মোরাল গ্রাউন্ড) নেই, সেটা পরিষ্কারভাবেই বলা যায়,’ বলেন শাহরিয়ার আলম।

এ পর্যায়ে রাষ্ট্রদূতদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি তারপরও বলব যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা প্রায় হয়েই যাবে যে কোনো সময়। এ সময় একটু ধৈর্য ধরারও প্রয়োজন আছে। রাষ্ট্রদূত যারা আছেন, তারা আমাদের অতিথি। তারা যদিও ভিয়েনা সনদ না মানেন, আমাদের রাষ্ট্র হিসেবে দায়িত্ব আছে।

শেয়ার করুন