অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় রোগ সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। ইসরায়েলি বোমা হামলার কারণে অঞ্চলটিতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা এবং বিশুদ্ধ পানি সংকট ও আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের উপচে পড়া ভীড়ের কারণে এই ঝুঁকি বেড়েছে। এতে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে বলে বুধবার (৮ নভেম্বর) সতর্ক করেছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ‘তুমুল লড়াইয়ের কারণে গাজায় হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় অধিক লোকের ভীড় ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার অভাব সংক্রামক রোগের দ্রুত বিস্তার ঘটাচ্ছে। এরইমধ্যে কিছু উদ্বেগজনক প্রবণতাও দেখা দিয়েছে।’
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় জ্বালানির অভাবে পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্টও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অবিশুদ্ধ ও লবণাক্ত পানি পান করতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। যা ডায়রিয়ার মতো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
ডব্লিউএইচও বলছে, গাজায় অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে ৩৩ হাজার ৫৫১ জনেরও বেশি মানুষ ডায়রিয়ায় ভুগেছে। যাদের বেশিরভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। একই বয়সী ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর এ সংখ্যা গত দুই বছরের মাসিক গড় সংখ্যার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২১ ও ২০২২ সালে প্রতি মাসে গড়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী ২ হাজার শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।
এছাড়া, জ্বালানীর অভাবে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বর্জ্যস্তুপগুলো দ্রুত ও ব্যাপকহারে পোকামাকড় ও ইঁদুরের বংশবিস্তারে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। ডব্লিউএইচও সতর্ক করেছে, ‘এরা রোগ বহন ও সংক্রমণ করতে পারে।’
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলোর প্রাথমিক সংক্রমণ প্রতিরোধ করা ‘প্রায় অসম্ভব’। আঘাত, অস্ত্রোপচার ও প্রসবের সময় এসবের ব্যবহার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এছাড়া, ‘রুটিন টিকাদান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া, একইসঙ্গে সংক্রামক রোগের চিকিত্সায় ওষুধের সংকট সংক্রামিত রোগ বিস্তারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে।