ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার মুকুন্দপুরে মুক্তিযুদ্ধ মনুমেন্ট ও বিশ্রামাগারের উদ্বোধন করা হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯ নভেম্বর মুকুন্দপুর এলাকাটি প্রথম শত্রু মুক্ত হয়েছিল। সেই স্মৃতি সংরক্ষণে পর্যটন কর্পোরেশনের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মনুমেন্ট ও বিশ্রামাগার।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১ টায় এই মনুমেন্ট ও বিশ্রামাগারের উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। পরে তিনি মুকুন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
এসময় মোকতাদির চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে এই কাজটি অনেক আগে করার দরকার ছিল। বিজয়নগর এখন পর্যটনের জন্য সুন্দর জায়গার সৃষ্টি হয়েছে। এখানে মানুষ এসে যেন বিশ্রাম নিতে পারে সেজন্য এখানে একটি বিশ্রামাগারও নির্মাণ করা হয়েছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ আমাদের ভোট দিল কি দিলো না সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমরা যে উন্নয়ন করেছি সে কথা সবার জানা দরকার। আমি এবার মানুষের কাছে ভোট চাইবো না। কারণ আমি দেখতে চাই, ভালো কাজের মূল্যায়ন আছে কিনা। এ সময় তিনি দলের ভিতরে ইউনিয়ন পর্যায়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আল মামুনের সঞ্চালনায় এসময় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌরসভার মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সহ-সভাপতি হাজি মো. হেলাল উদ্দিন, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলী, বিজয়নগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ড মো. দবির উদ্দিন ভূঁইয়া, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর মিরধা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুর রহমান মান্না, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাজু আহমেদসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ১৯ নভেম্বর বিজয়নগর উপজেলার মুকুন্দপুর, সেজামুড়া ও তার আশপাশ এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে ১৯ জন পাক সেনা নিহতের পর এই এলাকাটি শত্রু মুক্ত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শত্রু মুক্ত হতে শুরু করেন। পরে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে স্বাধীনতা অর্জন করে। আর বীর যোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে ৮৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪৫৯ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন মনুমেন্ট ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করে পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। এতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ ছাড়াও তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি বিশ্রামাগার রয়েছে।